পাতা:সটীক মেঘনাদবধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯১৯).pdf/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩২
মেঘনাদবধ কাব্য

মহাক্লেশে; যমদূত পীড়য়ে পুলিনে,
জলে জ্বলে পাপ-প্রাণ, তপ্ত তৈলে যেন!
চল মোর সাথে তুমি; হেরিবে সত্বরে
নরচক্ষু কভু নাহি হেরিয়াছে যাহা!”
ধীরে ধীরে রঘুবর চলিলা পশ্চাতে,
সুবর্ণ দেউটি সম অগ্রে কুহকিনী
উজ্জ্বলি বিকট দেশ। সেতুর নিকটে
সভয়ে হেরিলা রাম বিরাট-মূরতি
যমদূত দণ্ডপাণি। গর্জ্জি বজ্রনাদে
সুধিল কৃতান্তচর,—“কে তুমি? কি বলে,
সশরীরে, হে সাহসি! পশিলা এ দেশে
আত্মময়? কহ ত্বরা, নতুবা নাশিব
দণ্ডাঘাতে মুহূর্ত্তেকে।” হাসি মায়াদেবী
শিবের ত্রিশূল মাতা দেখাইলা দূতে।
নতভাবে নমি দূত কহিলা সতীরে;—
“কি সাধ্য আমার, সাধ্বি! রোধি আমি গতি
তোমার? আপনি সেতু স্বর্ণময় দেখ
উল্লাসে, আকাশ যথা ঊষার মিলনে!”
বৈতরণী-নদী পার হইলা উভয়ে।
লৌহময় পুরীদ্বার দেখিলা সম্মুখে
রঘুপতি; চক্রাকৃতি অগ্নি রাশি রাশি
ঘোরে অবিরামগতি চৌদিক উজলি!