পাতা:সটীক মেঘনাদবধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯১৯).pdf/২৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩৪
মেঘনাদবধ কাব্য

মহাপীড়া! বিসূচিকা, গতজ্যোতিঃ আঁখি;
মুখমলদ্বারে বহে লোহের লহরী
শুভ্রজলরয়রূপে। তৃষ্ণারূপে রিপু
আক্রমিছে মুহুর্ম্মুহুঃ; অঙ্গগ্রহ নামে
ভয়ঙ্কর যমচর গ্রহিছে প্রবলে
ক্ষীণ অঙ্গ, যথা ব্যাঘ্র, নাশি জীব বনে,
রহিয়া রহিয়া পড়ি কামড়ায় তারে
কৌতুকে। অদূরে বসে সে রোগের পাশে
উন্মত্তা— উগ্র কভু, আহুতি পাইলে
উগ্র অগ্নিশিখা যথা; কভু হীনবলা!
বিবিধ ভূষণে কভু ভূষিত; কভু বা
উলঙ্গ, সমর-রঙ্গে হরপ্রিয়া যথা
কালী। কভু গায় গীত করতালি দিয়া
উন্মদা; কভু বা কাঁদে; কভু হাসিরাশি
বিকট অধরে; কভু কাটে নিজ গলা
তীক্ষ্ণ-অস্ত্রে; গিলে বিষ; ডুবে জলাশয়ে;
গলে দড়ি। কভু, ধিক্! হাব-ভাব-আদি
বিভ্রমবিলাসে বামা আহ্বানে কামীরে
কামাতুরা। মল, মূত্র, না বিচারি কিছু,
অন্নসহ মাখি, হায়, খায় অনায়াসে।
কভু বা শৃঙ্খলাবদ্ধা, কভু ধীরা যথা
স্রোতোহীন প্রবাহিণী— পবন-বিহনে!