পাতা:সটীক মেঘনাদবধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯১৯).pdf/২৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৭৬
মেঘনাদবধ কাব্য

মহাতীর্থে সাধ্বী—সতী প্রমীলা—সুন্দরী
খুলি রত্ন-আভরণ, বিতরিলা সবে।
প্রণমিয়া গুরুজনে মধুরভাষিণী,
সম্ভাষি মধুরভাষে দৈত্যবালাদলে,
কহিলা;— “লো সহচরি, এতদিনে আজি
ফুরাইল জীব-লীলা জীবলীলা-স্থলে
আমার! ফিরিয়া সবে যাও দৈত্যদেশে।
কহিও পিতার পদে এ সব বারতা,
বাসন্তি! মায়েরে মোর”—হায় রে, বহিল
সহসা নয়নজল! নীরবিলা সতী;—
কাঁদিল দানববালা হাহাকার রবে!
মুহূর্ত্তে সম্বরি শোক কহিলা সুন্দরী;
“কহিও মায়েরে মোর, এ দাসীর ভালে
লিখিলা বিধাতা যাহা, তাই লো ঘটিল
এত দিনে! যাঁর হাতে সঁপিলা দাসীরে
পিতা মাতা, চলিনু লো আজি তাঁর সাথে;—
পতি বিনা অবলার কি গতি জগতে?
আর কি কহিব, সখি? ভুল না লো তারে—
প্রমীলার এই ভিক্ষা তোমা সবা কাছে।”
চিতায় আরোহি সতী (ফুলাসনে যেন!
বসিলা আনন্দমতি পতি-পদতলে;
প্রফুল্ল–কুসুমদাম কবরী-প্রদেশে।