পাতা:সটীক মেঘনাদবধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯১৯).pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
মেঘনাদবধ কাব্য

ভৈরবে। কাঁপিলা লঙ্কা, কাঁপিলা জলধি!
সাজিছে রাবণ রাজা, বীরমদে মাতি;—
বাজিছে রণ-বাজনা; গরজিছে গজ;
হ্রেষে অশ্ব; হুঙ্কারিছে পদাতিক, রথী;
উড়িছে কৌশিক-ধ্বজ; উঠিছে আকাশে
কাঞ্চন-কঞ্চুক-বিভা; হেনকালে তথা
দ্রুতগতি উত্তরিলা মেঘনাদ রথী।
নাদিল কর্ব্বুরদল হেরি বীরবরে
মহাগর্ব্বে। নমি পুত্ত্র পিতার চরণে,
করযোড়ে কহিলা;—“হে রক্ষঃকুল-পতি!
শুনেছি, মরিয়া না কি বাঁচিয়াছে পুনঃ
রাঘব? এ মায়া, পিতঃ, বুঝিতে না পারি!
কিন্তু অনুমতি দেহ; সমূলে নির্ম্মূল
করিব পামরে আজি! ঘোর শরানলে
করি ভস্ম, বায়ু-অস্ত্রে উড়াইব তারে;
নতুবা বাঁধিয়া আনি দিব রাজ-পদে।”
আলিঙ্গি কুমারে, চুম্বি শিরঃ, মৃদুস্বরে
উত্তর করিলা এবে স্বর্ণ-লঙ্কাপতি;
“রাক্ষস-কুল-শেখর তুমি, বৎস! তুমি
রাক্ষস-কুল-ভরসা। এ কাল-সমরে
নাহি চাহে প্রাণ মম পাঠাইতে তোমা
বারম্বার! হায়, বিধি বাম মম প্রতি।