পাতা:সটীক মেঘনাদবধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯১৯).pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় সর্গ
৪৫

“পরম-অধর্ম্মাচারী নিশাচর-পতি—
দেব-দ্রোহী! আপনি, হে নগেন্দ্র-নন্দিনি!
দেখ বিবেচনা করি। দরিদ্রের ধন
হরে যে দুর্ম্মতি, তব কৃপা তার প্রতি
কভু কি উচিত, মাতঃ! সুশীল রাঘব,
পিতৃ-সত্য-রক্ষা-হেতু, সুখ-ভোগ ত্যজি
পশিল ভিখারী-বেশে নিবিড় কাননে!
একটি রতনমাত্র আছিল তাহার
অমূল্য; যতন কত করিত সে তারে,
কি আর কহিবে দাস? সে রতন, পাতি
মায়াজাল, হরে দুষ্ট! হায়, মা, স্মরিলে
কোপানলে দহে মন! ত্রিশূলীর বরে
বলী রক্ষঃ, তৃণজ্ঞান করে দেবগণে!
পর-ধন, পর-দারলোভে সদা লোভী
পামর। তবে যে কেন (বুঝিতে না পারি)
হেন মূঢ়ে দয়া তুমি কর, দয়াময়ি!”
নীরবিলা স্বরীশ্বর; কহিতে লাগিলা
বীণাবাণী স্বরীশ্বরী মধুর সুস্বরে;—
“বৈদেহীর দুঃখে, দেবি, কার না বিদরে
হৃদয়? অশোক-বনে বসি দিবানিশি,
(কুঞ্জবন-সখী পাখী পিঞ্জরে যেমতি)
কাঁদেন রূপসী শোকে! কি মনোবেদনা