পাতা:সটীক মেঘনাদবধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯১৯).pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
মেঘনাদবধ কাব্য

নানা আভরণ; হেরি যে সবে, পিণাকী
ভুলিবেন, ভুলে যথা ঋতুপতি, হেরি
মধুকালে বনস্থলী কুসুম-কুন্তলা।”
এতেক কহিয়া রতি, সুবাসিত তেলে
মাজি চুল, বিনাইলা মনোহর বেণী।
যোগাইলা আনি ধনী বিবিধ ভূষণে,
হীরক-মুকুতা-মণি-খচিত; আনিলা
চন্দন, কেশরসহ কুঙ্কুম কস্তুরী;
রত্ন-সঙ্কলিত-আভা কৌষেয় বসনে।
লাক্ষারসে পা-দুখানি চিত্রিলা হরসে
চারুনেত্রা। ধরি মূর্ত্তি ভুবনমোহিনী,
সাজিলা নগেন্দ্রবালা; রসানে মার্জ্জিত
হেম-কাস্তি-সম কান্তি দ্বিগুণ শোভিল!
হেরিলা দর্পণে দেবী ও চন্দ্র-আননে;
প্রফুল্ল-নলিনী যথা বিমল-সলিলে
নিজ বিকচিত রুচি। হাসিয়া কহিলা,
চাহি স্মর-হর-প্রিয়া স্মর-প্রিয়া পানে;—
“ডাক তব প্রাণনাথে।” অমনি ডাকিল,
(পিককুলেশ্বরী যথা ডাকে ঋতুবরে),
মদনে মদন-বাঞ্ছা। আইলা ধাইয়া
ফুল-ধনু, আসে যথা প্রবাসে প্রবাসী,
স্বদেশ-সঙ্গীত-ধ্বনি শুনি রে উল্লাসে!