পাতা:সতী-দীনেশচন্দ্র সেন.djvu/১১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।



 ভৃগু-প্রজাপতির গৃহে মহাযজ্ঞ—অঙ্গিরা, মরীচি প্রভৃতি দেবর্ষিগণ মন্ত্রপাঠ করিতেছেন। রাত্রিকালে চন্দ্র ও দিবসে সুর্য্য পর্য্যায়-ক্রমে দ্বারদর্শীদ পদ গ্রহণ করিয়াছেন। দেবসভায় বিষ্ণু মাল্য-চন্দন পাইয়া যজ্ঞের কার্য্য পর্য্যবেক্ষণ করিতেছেন, এবং দেবরাজ ইন্দ্র কর্ম্মকর্তৃরূপে অভ্যাগতদিগকে আদরে আপ্যায়িত করিতেছেন। স্বয়ং ব্রহ্মা সপ্তর্ষিমণ্ডল ও বৃহস্পতির সঙ্গে শাস্ত্র-বিচার জুড়িয়া দিয়াছেন; ঊনকোটি তাহার হস্তে আলো রক্ষার ব্যবস্থা হইয়াছে। তাঁহারা বিশেষ করিয়া রন্ধনশালা পর্য্যবেক্ষণ করিতেছেন, বরুণ ভৃঙ্গারহস্তে নবাগত দেবগণের পদ-প্রক্ষালন করিতেছেন। কপিলাগাভী অজস্রধারায় দুগ্ধ প্রদান করিতেছে এবং বিষ্ণুদূতগণ সেই দুগ্ধ হইতে সদ্যঃ হব্য প্রস্তুত করিতেছে। সেই হব্যে পুষ্ট হইয়া হোমাগ্নি জ্বলিতেছে।

 যমরাজের সঙ্গে অশ্বিনী-কুমারদ্বয় আয়ুর্ব্বেদ সম্বন্ধে তর্ক উত্থাপন করিয়াছেন। যমরাজ মাণিক্য-মণ্ডিত একটা নস্যাধার হইতে নস্য গ্রহণ করিয়া অনেক কথা শুনিয়া দুই একটি উত্তর দিতেছেন। তাঁহার রথবাহক স্বর্ণ-শৃঙ্গ কৃষ্ণকায় মহিমপ্রবর ব্রহ্মার অঙ্গের রক্তজ্যোতিঃ দেখিয়া ক্রোধে রোমাঞ্চিত হইতেছে। শূলপাণি সভার একটু দূরে ঊর্দ্ধনেত্র হইয়া বসিয়া আছেন—যেন প্রশান্ত রজতগিরি। সেই শ্বেতকান্তি সৌম্যমূর্ত্তি বেষ্টন করিয়া যে রক্তচক্ষু সর্পরাজ চতুর্দ্দিকে দৃষ্টিপাত করিতেছিল, সহসা সে বিষ্ণুরথবাহী গরুড়কে দেখিয়া ভয়ে মহাদেবের সিদ্ধির থলিয়ার ভিতর মাথাটা গুঁজিয়া দিতেছে। মহাদেবের পার্শ্বে বৃষভবর অর্দ্ধনিমীলিত-চক্ষে স্বীয় প্রভুকে দর্শন করিতেছে। বৃষের মূর্ত্তি কতকটা শিবের ন্যায়ই শান্ত।

১১