পাতা:সতী-দীনেশচন্দ্র সেন.djvu/১৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পৌরাণিকী

নিবৃত্তি ও ব্রহ্মানন্দ, কোন্‌টা চাই? দক্ষের কঠোর অনুশাসন পৃথিবীর অসহ্য হইল। ভীত, ত্রস্ত এবং মূক জগতের প্রাণ ফাটিয়া যাইতেছিল। তথাপি মনের কথাটি উচ্চারণ করিবার সাহস তাহার হইল না—সে কথাটি, “আমরা দক্ষকে চাই না, আমরা শিবকে শিরে ধারণ করিব।”


 বিষ্ণু জগতের রক্ষাকর্ত্তা। তিনি নারদকে ডাকিয়া বলিলেন, “ব্রহ্মা ত সৃষ্টি করিয়াই দায় হইতে মুক্ত, এই জগৎকে রক্ষা করা কিরূপ শক্ত তাহা ত তিনি জানেন না। পুত্রটি অতিরিক্ত আদরে নষ্ট হইতেছে, ইহার দুর্গতির সীমা পরিসীমা থাকিবে না। আমার সে সকল কথা এখন আত্মীয়তা-স্থলে না বলাই ভাল, কিন্তু পৃথিবীর রক্ষার একটা উপায় ত করিতে হইবে। তুমি বৈবস্বত মনুর পুত্র প্রিয়ব্রতকে যজ্ঞ করিতে বলিয়া আইল। সে অতি প্রবল রাজা, সাতবার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করিয়াছিল, প্রদক্ষিণ-কালে তাহার রথচক্রের ঘর্ষণে পৃথিবী ক্ষয়গ্রস্ত হইয়াছিল, সেই সপ্তরেখা সপ্ত-সিন্ধুতে পরিণত হইয়াছে। প্রিয়ব্রত জগতের রাজকুল-চক্রবর্ত্তী। বিশেষতঃ, সে দক্ষের শ্যালক। সম্ভবতঃ, সে সাহসী হইয়া যজ্ঞারম্ভ করিতে পারে।”

 নারদের বীণাধ্বনি শুনিয়া প্রিয়ব্রত দিগ্বিজয়ে যাত্রা স্থগিত করিয়া দেবর্ষির আগমন প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন। স্বর্গপ্রদেশ অপূর্ব্ব বীণাঝঙ্কারে নাদিত করিয়া দিব্যপ্রভা-মণ্ডিত ঋষিপ্রবর প্রিয়ব্রতের প্রাসাদে অবতীর্ণ হইলেন। নারদ তাঁহাকে গোপনে বিষ্ণুর অভিপ্রায় জানাইলেন। কিছুকাল নীরব থাকিয়া—প্রিয়ব্রত বলিলেন, “যাহার

১৮