পাতা:সতী-দীনেশচন্দ্র সেন.djvu/২৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পৌরাণিকী

লক্ষ্য করিয়া নোয়াইয়া পড়িলেন। যেন সেই চরণকমলে তাঁহার কোন বিনীত নিবেদন আছে।

 শিব বলিলেন, “তুমি পিতৃগৃহে যাইতে চাহিতেছ, কিন্তু বিনা নিমন্ত্রণে আমি কি করিয়া বলিব ‘তুমি যাও’।”

 সতী বলিতে চাহিলেন, “নিমন্ত্রণ আবার কি? তাঁহার বিরহিণী জননী যে তাঁহার পথের দিকে দুইটি চক্ষু ফেলিয়া রাখিয়াছেন, সে নিমন্ত্রণ তিনি প্রাণের প্রাণে অনুভব করিতেছেন। তিনি দক্ষের আদরিণী কন্যা, পিতা কি মুহূর্ত্তেও কৈলাসপুরীর দিকে তাকাইয়া সতীর কথা চিন্তা করিবেন না? সতীকে হস্তে ধারণ করিয়া যে তিনি সর্ব্ব শুভকার্য্যে মন্ত্রোচ্চারণ করিতেন, আজ কি সতীকে তিনি ভুলিয়া যাইবেন? কন্যাকে আবার নিমন্ত্রণ কে করিয়া থাকে? নিজের মাতৃ পিতৃ অঙ্কে যাইবেন, কোন কন্যা তজ্জন্য নিমন্ত্রণের প্রতীক্ষা করিয়া থাকে? দক্ষপুরীর আম্রবনে সতীর স্বহস্ত রোপিত বৃক্ষগুলি এই উৎসবের সময় সতীকে হারাইয়া শাখাগ্র হেলনপূর্ব্বক তাঁহাকে খুঁজিতেছে। বাল্যসখীগণ ও ভগিনীগণ সতীর জন্য ব্যাকুল হইয়া আছে, সকলের আকর্ষণ তিনি মনে মনে অনুভব করিতেছেন। পিতৃগৃহে যাইতে তিনি আর কোন্‌ নিমন্ত্রণের প্রতীক্ষা করিবেন?”

 সতী করযোড়ে মহাদেবের পাদপদ্মে নিশ্চল দৃষ্টি স্থাপিত করিয়া দাঁড়াইয়াছিলেন, তিনি একটি কথাও বলেন নাই! যিনি কোন কথাই বলেন না, তাঁহার মনোভাব যেরূপ সুস্পষ্ট বোঝা যায়, অন্য কাহারও সেরূপ নহে!

 শিব কি করিবেন! তিনি দেবীর ইচ্ছা পূর্ণ করিতে সাহসী হইলেন না। এই সূত্রে কি অনর্থ ঘটবে তিনি তাহা আশঙ্কা করিয়া বিচলিত

২৬