পাতা:সতী-দীনেশচন্দ্র সেন.djvu/৩৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সতী

আমাদের সকলের অপেক্ষা উৎকৃষ্ট বস্ত্র ও ভূষণে অলঙ্কত করিয়া স্বামিগৃহে পাঠাইবেন, তা’ যেরূপ ঘর, সে সব রাখিতে পারিলে হয়! তিনি প্রতি বৎসরের উপযোগী ভূষণ ও বস্ত্র তোমাকে পাঠাইয়া দিবেন, তাহা হইলে তোমার আর কোন দুঃখের কারণ থাকিবে না।”

 দেবী কোন উত্তর করিলেন না। এমন সময় চিত্রা সংজ্ঞাকে বলিলেন, “দিদি, শচীর সঙ্গে নাকি তোমার বড় ভাব? শচীর হারে যে পদ্মরাগমণিখানি, তাহা দেবরাজ কোথায় পাইয়াছিলেন, তাহা কি শুনিয়াছ? উহা ঠিক একটি অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ন্যায়, বিশ্বকর্ম্মা জহুরী তাহার পলগুলি কাটিয়া দিয়াছেন, এমন মণি অমরাবতীতে নাই।” সংজ্ঞা বলিলেন, “ঐ মণি সুন্দ-উপসুন্দরের ঘরে ছিল, ইন্দ্র তাঁহাদের কোষাগারে প্রাপ্ত হন। উহা একবার মন্দাকিনীতে পড়িয়া গিয়াছিল, শুনিয়াছি নাকি মন্দাকিনীর যে স্থানে উহা নিপতিত হইয়াছিল, সেই স্থান হইতে অপূর্ব্ব প্রভা বিকীর্ণ করিয়া জলের উপর ঠিক একটি উজ্জ্বল আলোর ফুলের মত দেখাইতেছিল, সুতরাং তাহা উদ্ধার করিতে কোনই অসুবিধা হয় নাই।” চিত্রা বলিল, “সংজ্ঞা-দিদি! তোমার শাড়ীখানা ভাই বড় চমৎকার, অয়স্কান্তমণির গুঁড়ার দ্বারা ইহা রাঙ্গান হইয়াছে, তোমায় উহা বেশ মানাইয়াছে।” ইহার মধ্যে রোহিণী বলিলেন, “ভাই, এখানে কি বেশী দিন থাকা চলে? মা আমার একটি মাস থাকিতে বলিয়াছিলেন, ঊনকোটি তারা আমাদের বাড়ীতে আলো দেয়, এখানে যেন সব আঁধার আঁধার ঠেক্‌ছে, আর এখানে চলাফেরার বড় কষ্ট, সেখানকার বিস্তৃত ছায়াপথে বিমানে চড়িয়া যাই, আর এ পাড়াগাঁয়ের পথে কাঁকর কেবলই পায়ে বাজে।” রোহিণীর কথা শেষ না হইতে আর্দ্র বলিয়া উঠিলেন, “আমাদের সোমরস এখানে পাওয়ার

৩৯