তিনি তনয়ার আগমনসংবাদ তখনও নিজে স্বামীকে বলিয়া পাঠান নাই।
এদিকে অন্তঃপুর-দ্বারে নন্দী দাঁড়াইয়া ছিল, তাহার ভ্রূ কুঞ্চিত হইয়া রহিয়াছিল। যজ্ঞের সমস্ত সম্ভারের যে দিকেই সে দৃষ্টিপাত করিয়াছে, তাহাতেই সে ক্রুদ্ধ হইয়া পড়িয়াছে। যজ্ঞের ধূমে তাহার শ্বাসরোধ হইতেছিল। বেদী-সন্নিহিত হোমাগ্নি তাহার নিকট চিতাগ্নির মত বোধ হইতেছিল; কেন তাহার হৃদয় বিচলিত হইতেছিল, সে নিজেই বুঝিতে পারে নাই। যজ্ঞভাগ যে শিবকে নিবেদিত হইবে না, এ কথা সে জানিত না, কিন্তু সমস্ত দক্ষপুরীর বায়ুস্তর তাহার শরীরে জ্বলন্ত অগ্নিশিখার ন্যায় প্রদাহ উপস্থিত করিতেছিল; ভাবী কোন অমঙ্গল আশঙ্কায় তাহার বিশাল বক্ষ ক্ষণে ক্ষণে কম্পিত হইতেছিল।
দক্ষ যজ্ঞশালায় বসিয়া আছেন, সতী বিনা নিমন্ত্রণেই আসিয়াছেন, এ সংবাদ তাঁহার কর্ণগোচর হইয়াছে। একবার ভাবিতেছেন—সতী আমার বড় আদরের কন্যা; আমার শয়নপ্রকোষ্ঠে দিনরাত্রি আমার পরিচ্ছদাদি যত্নপূর্ব্বক রাখিত, কতদিন বাহু দিয়া আমার কণ্ঠ জড়াইয়া ধরিয়া আমার প্রাণ স্নিগ্ধ করিত; আমাকে অপর কন্যারা ভয় করিয়াছে, তাহাদের আমার নিকট যাহা কিছু প্রার্থনা থাকিত, সতীর মুখে তাহারা তাহা আমাকে জানাইত। সতীকে কখনও কোন বহুমূল্য অলঙ্কার, এমন কি সামান্য একটি বনফুল দিলেও, সে তাহার