অন্তঃপুরের দ্বার ছাড়িয়া আসিয়াছিল; যখন দেখিল সতী দেহত্যাগ করিলেন, তখন ভীষণ শূল লইয়া সে যজ্ঞশালাকে আক্রমণ করিল। কৃতান্তের ন্যায় তাহার মুর্ত্তি ভীষণ হইল, তাহার মস্তকের অসংস্কৃতজটাকলাপ বর্ষাকালের মেঘের ন্যায় প্রধূমিত ও কৃষ্ণবর্ণ হইয়া উঠিল, দেহ হইতে জ্বালা বিকীর্ণ হইতে লাগিল। যজ্ঞ নষ্ট হয় দেখিয়া হোতা ভৃগু অগ্নিতে আহুতি প্রদান করিলেন, তাহাতে ঋভু নামক এক খড়্গহস্ত দেবতা হোমানল হইতে উদ্ভূত হইল, সে নন্দীর শূল কাড়িয়া লইল ও যজ্ঞশালা হইতে তাহাকে তাড়াইয়া দিল।
সতী বিদায় লইয়া যাওয়ার পরে শিব বিচলিত হইয়া পড়িলেন। প্রসন্ন শিবমুখে বিষাদের রেখা পড়িল। যাইবার সময় আগ্রহাতিশয়ে সতী তাঁহাকে প্রণাম করিয়া যান নাই—এরূপ ভ্রম উাহার কেন হইল? শিব মনে মনে তাঁহাকে আশিস্ করিতে লাগিলেন, আশীর্ব্বাণী আকাশের উর্দ্ধস্তরে ঠেকিয়া ফিরিয়া আসিল, শিব দেবীর অমঙ্গলাশঙ্কায় বিচলিত হইয়া উঠিলেন।
সতী যে স্থানে স্নান করিতেন, সেখানে অলকানন্দা ও মন্দা নাম্নী নদীদ্বয় গঙ্গাধারার সঙ্গে মিশিয়াছে। তাহার পার্শ্বে সৌগন্ধিক নামক বন, সেই বনে নানাবর্ণের স্থলপদ্ম ও পুন্নাগবৃক্ষ। শিব সেই স্থানে বিচরণ করিতে লাগিলেন, তাঁহার জটাবন্ধন খুলিল, কটিতে শার্দ্দূলচর্ম্ম এলাইয়া গেল, কর্ণের ধুস্তূর ফুল খসিয়া পড়িল। মন্দানদীতে গন্ধর্ব্বরমণীগণের স্নানকালে তাহাদের গাত্রভ্রষ্ট নবকুঙ্কুমে জল পীতবর্ণ