সতুর মা লইয়াছে। এখন তাহার শেষ সময়, বাৰ্দ্ধক্য আসিয়া তাহাকে ঘিরিয়াছে—তাহার দেহ ৰনের শক্তি হরণ করিয়াছে । জগতে অনেক আশা আকাঙক্ষা লইয়া সে আসিয়াছিল, চাহিবার তাহার অনেক ছিল, কিন্তু পাইবার দিনে সে চাহে নাই ; ভোগের দিনে সে ত্যাগের পথ ধরিয়া চলিয়াছিল, আজ ত্যাগের দিনে সে ভোগের প্রত্যাশী হইয়া বসিয়াছে। জীবনের সংগ্রামে যুঝযুঝি করিয়া, সে এখন ক্লান্ত অবসন্ন। তাই এখন সকলের নিকট,— চিরদিন যাহাদের সেবার প্রাণপাত করিয়াছে, তাহাদের নিকট হইতে একটু সেবা যত্ন—একটু আন্তরিক স্নেহ মমতা সে প্রত্যাশা করে। তাহার জীবনে হৃদয়ভরা স্নেহ সে অযাচিত ভাবে অপৰ্য্যাপ্তরূপে দান করিয়া আসিয়া বিশ্ববাসীর দ্বারে আজ বিন্দু মেহের প্রার্থী! কিন্তু কিছু না, কিছু না,—সব শূন্ত, সব মিথ্যা ! অজস্র যাহার কাছে লাভ করিয়াছে, তাহাকে বিন্দু দানে আজ বিশ্বজন কাতর ! সতুর মা’র জীবনের দিন যতই সংক্ষিপ্ত হইয়া আসিতে ছিল, তাহার কৰ্ম্মের শক্তি যতই লোপ পাইতেছিল, ততই সে বুঝিতেছিল–পদ্মপত্রে জলের ন্যায় তাহার অধিকার এ সংসারে ক্রমেই অস্থায়ী হইয়া উঠিয়াছে।
পাতা:সতুর মা.djvu/৬১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।