পাতা:সবুজ পত্র (চতুর্থ বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S 8 সবুজ পত্ৰ আশ্বিন ও কাৰ্ত্তিক, ১৩২৪ সামাজিক সমস্যার সম্মুখীন,-আমাদের নখদপানেই আমরা তার সমাধান দেখতে. পাচ্ছি। সেটা হচ্ছে আমাদের সনাতন শাস্ত্রীয় সালসা, আর তার সাথে দেশাচারের সহস্ৰ অনুপান। এ যেন শিশুর কান্নাকাটি থামাতে গিয়ে দুধের সাথে আফিমের প্ৰয়োগ । আমরা যাকে শান্তি বলি, প্ৰকৃত পক্ষে সেটা হচ্ছে সামাজিক সুষুপ্তি ! এই যদি সামাজিক জীবনের চরম লক্ষ্য হতো,- তাহলে অবিশ্যি ও ব্যবস্থা খুবই সমীচিন এবং বিজ্ঞানসম্মত হতো ! কিন্তু তা ত নয়। অন্নচিন্তা। যার নেই এমন লোকের পক্ষেও পক্ষাঘাত খুব লোভনীয় হতে পারে না। সমস্যা-পরিশূন্য অবস্থাই ত সামাজিক জীবনের পক্ষে পক্ষাঘাত ! এমন কোনো শাস্ত্রানুশাসন সূত্রের সমাহার কল্পনাতেই আনা যায় না, যাতে করে মানুষের ক্রমবিকাশশীল মনের সকল রকমের সমস্যারই সমাধান সম্ভবপর হয় । t এই অসম্পূর্ণতার ফাঁক দিয়েই তা যুগে যুগে মানুষের চিন্তা এবং সাধনা সমাজ-শরীরে প্রবেশ লাভ করেছে । যে দিন আমরা এ প্ৰবেশিকা বন্ধ করেছি--সেই দিন থেকেই আমাদের সমাজে সামাজিক উচ্চ-চিন্তার স্রোতও মরে এসেছে । আজ যে আমাদের সমাজজোড়া এত অশান্তি-এই যে নমঃশূদ্র তার জল চালাতে চায়, কৈবৰ্ত্ত আর ভাড়া খাটতে চায় না, বারুই যজ্ঞসুত্র ধারণের অধিকারের জন্যে ব্যগ্র-এ সবই ত সেই বদ্ধ-দুয়ারের বিরুদ্ধে প্ৰতিবাদ। এই যে “সবুজ” মনের উচ্ছঙ্খলতা, যার দমনে বঙ্গসাহিত্য আজ মুখর—তাও ত সেই বন্ধ-দুয়ারে তাদের বিরুদ্ধ মনের ঘাত প্ৰতিঘাত । এ চাঞ্চল্যের ভিতরে সমাজ-বিদ্বেষ নেই, আছে সমাজকে গতিশীল করবার আগ্ৰহ ! t