পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

à 88 "G শ্রাবণ, ১৩২৩ তাহলে যা-কিছু আছে তা নিশ্চল হয়ে থাকত, কেবলি আরো-কিছুর দিকে আপনাকে নূতন করে তুলত না। এই আরো-কিছুর দিকেই সমস্ত জগতের আনন্দ কেন—এই অজানা আরো-কিছুর বঁশি শুনেই সে কুল ত্যাগ করে কেন ? ঐ দিকে শূন্য নয় বলেই, ঐ দিকেই সে পূৰ্ণকে অনুভব করে বলেই। সেই জন্যই উপনিষদ বলেচেন — ভূমৈব সুখং, ভূমীত্বেৰ বিজিজ্ঞাসিতব্যঃ। সেইজন্যই তা সৃষ্টির এই লীলা দেখাচি, আলো এগিয়ে চলেচে অন্ধকারের অকুলে, অন্ধকার নেমে আসূচে আলোর কুলে। আলোর মন ভুলেচে কালোয়, কালোর মন ভুলেচে আলোয়। G মানুষ যখন জগৎকে না-এর দিক থেকে দেখে, তখন তার রূপক একেবারে উল্টে যায়। প্রকাশের একটা উল্টো পিঠ আছে, সে হচ্চে প্ৰলয়। মৃত্যুর ভিতর দিয়ে ছাড়া প্ৰাণের বিকাশ হতেই পারে না। হয়ে-ওঠার মধ্যে দুটো জিনিষ থাকাই চাই,-যাওয়া এবং হওয়া । হওয়াটাই হচ্চে মুখ্য, যাওয়াটাই গৌণ। কিন্তু মানুষ যদি উল্টো পিঠেই চোখ রাখে,-বলে সবই যাচ্চে, কিছুই থাকচে না ; বলে জগৎ বিনাশেরই প্রতিরূপ, সমস্তই মায়া, যা-কিছু দেখচি, এ সমস্তই “ন” ; তাহলে এই প্ৰকাশের রূপকেই সে কালো করে, ভয়ঙ্কর করে দেখে ; তখন সে দেখে, এই কালে কোথাও এগাচ্চে না, কেবল বিনাশের বেশে নৃত্য করচে। আর অনন্ত রয়েচেন আপনাতে আপনি নিলিপ্ত, এই কালিমা তার বুকের উপর মৃত্যুর ছায়ার মত চঞ্চল হয়ে বেড়াচ্চে, কিন্তু স্তব্ধকে স্পর্শ করতে পারচে না। এই কালো দৃশ্যত আছে, কিন্তু বস্তুত নেই-আর যিনি কেবলমাত্ৰ আছেন, তিনি স্থির, ঐ প্রলয়রূপিনী না-থাকা তাকে