পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

or সবুজ পত্ৰ • चांदणी, भ७२७ অনাবশ্যকের তালমানের বোধ নেই, সে সময়কে উড়িয়ে দেয়, অসময়কে টিকতে দেয় না । সে সদর রাস্তা দিয়ে ঢোকে, খিড়কির রাস্ত দিয়ে ঢোকে, আবার জানােলা দিয়ে ঢুকে পড়ে। সে কাজের সময় দরজায় ঘা মারে, ছুটির সময় হুড় মুড়া করে আসে, রাত্রে ঘুম ভাঙিয়ে দেয়। তার কােজ নেই বলেই তার ব্যস্ততা আরো বেশী । আবশ্যক কাজের পরিমাণ আছে, অনাবশ্যক কাজের পরিমাণ নেই-এইজন্যে অপরিমেয়ের আসনটি ঐ লক্ষীছাড়াই জুড়ে বসে, ওকে ঠেলে ওঠানো দায় হয়। তখনই মনে হয় দেশ ছেড়ে পালাই, সন্ন্যাসী হয়ে বেরই, সংসারে আর টেকা যায় না । যাক, যেমনি বেরিয়ে পড়েচি, অমনি বুঝতে পেরেচি বিরাট বিশ্বের সঙ্গে আমাদের যে আনন্দের সম্বন্ধ, সেটাকে দিনরাত অস্বীকার করে কোনো বাহাদুরি নেই। এই যে ঠেলা ঠেলি ঠেসাঠেসি নেই, অথচ সমস্ত কানায় কানায় ভরা, এইখানকার দর্পণটিতে যেন নিজের মুখের ছায়া দেখতে পেলুম। “আমি আছি” এই কথাটা গলির মধ্যে, ঘরবাড়ীর মধ্যে ভারি ভেঙে চুরে বিকৃত হয়ে দেখা দেয়। এই কথাটাকে এই সমুদ্রের উপর, আকাশের উপর সম্পূর্ণ ছড়িয়ে দিয়ে দেখলে তবে তার মানে বুঝতে পারি-তখন আবশ্যককে ছাড়িয়ে, অনাবশ্যককে পেরিয়ে, আনন্দলোকে তার অভ্যর্থনা দেখতে পাই,-তখন স্পষ্ট করে বুঝি, ঋষি কেন মানুষদের অমৃতস্য পুত্রা বলে আহবান করেছিলেন । শ্ৰীরবীন্দ্ৰ নাথ ঠাকুর।