পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6398 गबूल श्रण পৌষ, ১৩২৩ লোকে একত্র বসে’ শুনতে পারে । আর আমাদের প্রধান যন্ত্র সেতারের আওয়াজ এত মৃদু যে, একটী ছোট ঘরে কেবল জন কুড়িক লোক বসে শুনলে তবেই তার রস পাওয়া যায়। তাও যদি অন্ধকার ও নিরাল হয় তবে আরো ভাল :-চাদের বা তারার আলোর চেয়ে বেশী তীব্ৰ আলোতে যেন সে ধ্বনি খোলে না, বিজলি বাতি এবং অমনোযোগী লোকের ভীড় ও কষ্টেচাপা হাসিকথার গুঞ্জনে ত একেবারেই মরমে মরে যায়,-এত সুকুমার তার প্রাণ, এত ক্ষীণ তার কায়া। এসীয় এবং য়ুরোপীয় প্রকৃতিতেও কি এই প্ৰভেদ লক্ষিত হয় না ?-ওদের ভজনভোজন, ওদের শিল্পকলা, ওদের জ্ঞানবিজ্ঞান শিক্ষাদীক্ষা-সবই যেন “দশে মিলি করি কাজ” ; আর আমাদের সবই নিভৃতে নির্জনে এক হাতে সম্পন্ন হয়। আমাদের দয়া মানে বিশেষ ব্যক্তিকে বিশেষ ব্যক্তির দান ; ধৰ্ম্ম মানে নীরবে একলা জপতপ ধ্যানধারণা ; দীক্ষার মন্ত্র পৰ্য্যন্ত কাউকে বলবার জো নেই ; আহার ব্ৰাহ্মণকে একলা করতে হয়, কথা কইলেও দোষ ; শিক্ষা মানে একটি গুরু গুটিকতক শিষ্যকে জ্ঞান দান করেন,-হয়ত অনেক বিদ্যা গুরুর সঙ্গেই লোপ পায় । মুসলমান ওস্তাদদের ত একটি বদনামই আছে যে, ভাল ভাল গান কাউকে শেখাতে চায় না, কত খোসামোদ করে সাক্রেদদের আদায় করতে হয় | আমি একটি বিশিষ্ট ওস্তাদকে জানতুম, যিনি তঁর গতের স্বরলিপি প্ৰকাশ করতে দিতে নারাজ হতেন, পাছে তঁর বাজনা শোনবার বা শেখবার লোক কমে যায় ! কত শত ভাল গৎ তার সঙ্গে কবরস্থ হয়েছে,-তারা কি পরকালে সাক্ষী দেবে ? এই দুর্ভেদ্য ভেদনীতি আমাদের জাতের মহাশত্রু। বৈষ্ণবধৰ্ম্ম এই সীমান্ত-রেখাগুলি প্রেমের উত্তাপে গলিয়ে মিলিয়ে কিছু দিনের মত