পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(89 সবুজ পত্ৰ ,ि S७३७ ঘোরতর সন্দেহ ;-আর যেটাতে বিচারের যথেষ্ট অবসর আছে, সে বিষয়ে আমরা হয়ে পড়েছি। একেবারে উদাসীন ! সৎ-অসৎ বেছে নেবার ধৈৰ্য্য ও উদারতা আমরা ঠিক যে পরিমাণে হারিয়েছি, সন্দেহ ও অবজ্ঞা করারূপ কাপণ্য ও ঠিক সেই পরিমানেই আমাদের পেয়ে বসেছে । আগুন নিভে এলে ধোঁয়ার ভাগটা স্বভাবতঃই অপৰ্যাপ্ত হয়ে’ ওঠে। আমাদের কৰ্ম্ম-প্ৰচেষ্টায়। যতই ভাটা পড়ছে, মনের আগুনের উত্তেজনা যতই কমে আসছে—আমাদের মনোজগতে বিধির চেয়ে নিষেধের মাত্ৰাও ততই প্রচুরতর হচ্ছে। একটু তলিয়ে দেখলেই দেখা যাবে,-বেশীর ভাগ নিষেধের মূলেই রয়েছেআমাদের কৰ্ম্ম-বৈমুখ্য। এ বিষয়ে আমাদের জোড়া মেলে না ! এ রোগের বীজ এ দেশের জল-হাওয়ার ভিতরে এমি নিৰ্ভাঁজে মিশিয়ে গেছে যে,-রোগটাই এখন আমাদের পক্ষে স্বাভাবিক ; আর রোগমুক্ত অবস্থা যেটা, সে হচ্ছে আমাদের কাছে একটা “নতুন-কিছু”। মাঝে মাঝে, স্থানে-অস্থানে আমরা আমাদের রক্ষণ-শীলতার বড়াই করে থাকি । নানা বিভিন্ন সভ্যতার সঙ্গে সংঘর্ষে এসেও আমরা নাকি আমাদের জাতি-গত বিশিষ্টতা হারাই নি । কিন্তু আমাদের সেই বিশিষ্টতাটা যে কি বস্তু, সেটা হাজারে এক জনও পরিষ্কার করে’ বলে দিতে পারেন না। আর সেটা বজায় থাকাতে আমাদের বর্তমানেই বা কি সুবিধে হচ্ছে, আর আখেরেই বা কি সুসার হবার আশা আছে, সে সব বিবেচনা করবার মত বুদ্ধি ও প্ৰবৃত্তি অনেকেরই নেই! এর চেয়ে বিড়ম্বন আর কি হ’তে পারে ? বস্তুটা যে কোথায়, কি অবস্থায় —ভা”জানিনে, তবু তার অস্তিত্বের গুজবেই বিভোর। ভাববার ধৈৰ্য্য আমাদের একটুও নাই-অহঙ্কারের তমো প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত