পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় বর্ষ, একাদশ সংখ্যা শিক্ষার লক্ষ্য ᏔaᏬᏄ এই পার্থক্যও তারতম্য আছে বলিয়াই সমাজে শ্রমবিভাগ ও কাৰ্য্যবিভাগ সম্ভবপর হইয়াছে, এবং এই বিভিন্নতার উপর মানুষের সভ্যতার প্রথম উন্মেষ হইতে অদ্যাবধি সমস্ত পরিণতি নির্ভর করিয়া রহিয়াছে। যদি শিক্ষার ফলে এই ব্যক্তিগত স্বাতন্ত্র্য লোপ করিয়া সকলকেই সর্বশক্তিসম্পন্ন আদর্শ-মানুষে পরিণত করা সম্ভাবপর হইত, তাহা হইলে সমাজের সমস্ত কাজের কল কারখানা তখনি বন্ধ হইয়া যাইত। মানুষে মানুষে প্ৰভেদ আছে বলিয়াই মানুষের প্ৰতি মানুষ আকৃষ্ট হয়। যদি শিক্ষার ফলে সকলেই আদর্শমানুষ, অর্থাৎ একছাঁচের মানুষ হইয়া উঠিত, তাহা হইলে আমাদের পরস্পরের সঙ্গ আমাদের নিকট এমনই অসহ বোধ হইত যে, মানুষ ঘর ছাড়িয়া বনে পালাইতে বিন্দুমাত্রও দ্বিধা করিত না , শেষ কথা, পৃথিবীতে মাঝে মাঝে এক একজন অতিমানুষের জন্ম হয়। তাহার ফলে কৰ্ম্মের জগতে বা চিন্তার রাজ্যে যে বিপ্লব উপস্থিত হয়, তাহা স্মরণ রাখিলে সমাজ যদি কেবল অতিমানুষেরই সমাজ হাইত তাহা হইলে ব্যাপারটা কি ঘটিত মনে করিতেও শরীর শিহরিয়া উঠে। অতএব তত্ত্ববেত্তারা যাহাঁই বলুন না কেন, শিক্ষার উদ্দেশ্য আদর্শ মানুষ গড়াও নয়, অতিমানুষ তৈরীও নয়। কেননা এই উদ্দেশ্যটা সিদ্ধ হইবার সুদূর সম্ভাবনাও নাই, এবং যদি কোনও সম্ভাবনা থাকিত তাহা হইলে তাহার ফল অতি ভয়ঙ্কর হইয়া উঠিত। ( R ) শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্বন্ধে বিজ্ঞলোকদের আর একটি মত এই যে, শিক্ষার লক্ষ্য হওয়া উচিত।--ছাত্রের চরিত্রগঠন। চরিত্র জিনিসটা