পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৭০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় বর্ষ, দ্বাদশ সংখ্যা শিশুশিক্ষার মূলমন্ত্র Nà বৎসরের মেয়ের ২৩ সস্তান, ঘরে ঘরেই দেখা যায়। এই সব বালিকাএক স্তন্যদান বা বোতলে বিলাতী ফুড খাওয়ানো, ও যতটুকু পরিস্কার না করলে নয়,-তাই ছাড়া আর কি করতে পারে ? তাদের ঘুমন্ত যৌবন কখনো জাগতে পায় না ; কৈশোর থেকে যৌবনের ধাপ ডিঙ্গিয়ে তারা প্রৌঢ়ত্বে এসে পৌচেছে—অথচ ধাপটাি আছে। ঠিক বয়সে যৌবন যখন তার আশাভরসা সাধআহলাদ নিয়ে সাড়া দেয়, তখন বালিকা তার শিশুদের সামলাতেই ব্যস্ত,-কাজেই মা কিম্বা শিশু কারো মেজাজ ভাল থাকে না। ফলে শিশুদেহ এবং মন দুইয়েরই স্বাভাবিক খোরাক পায় না। বাঙ্গালী শিশুর ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকেই যেমন স্তন্যদানের সময় অসময় থাকে না, তেমনি আদর তিরস্কারেরও সময় অসময় নেই । কখনও বা শোন মা তাকে নাচাচ্ছে “ওরে আমার টাকার তোড়া, ওরে আমার ধানের ঘাড়া”—আবার খানিক পরেই • দেখ সেই অস্ফুটবাক শিশুর গায়ে চড়ের উপর চড় পড়ছে-এ দৃশ্য ঘরে ঘরে । অতএব যদি মনুষ্য-শাবককে যথুর্থ মানুষ করে’ তুলতে হয়, তবে শিশুকাল হ’তে শুধু পুত্রসন্তানকে মানুষ করলে হবে না ; কন্যাসন্তানকে ও সমান যত্নসহকারে পালন করতে হবে, শিক্ষা দিতে হবে। কন্যাসন্তান ভূমিষ্ঠ হ’ল-শাখ বাজলে না—“ওগো মেয়ে হয়েছে”;-এই যে সেই শিশুর প্রতি অবহেলা আরম্ভ হ’ল, তার শেষ হবে শেষদিনে। আর তিনি যদি ভাগ্যবতী হন, পাতপুত্র রেখে যদি মরতে পারেন, তবে তাঁর আদর হবে তঁর শ্রাদ্ধের সময় । মধ্যবিত্ত গৃহস্থঘরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কন্যাগুলিকে নিরীক্ষণ ক'রে দেখলে *ৰাই বুঝতে পারবেন—তাদের কি অসহায় ভােব, কি ভীতচকিত মলিন