পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৭১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সবুজ পত্ৰ চৈত্র, ১৩২৩ মুখ। তিন বছরের মেয়ে, তিন মাসের ছোট ভাইবোনের পরিচর্য্যায় দীক্ষিত হয়। পাঁচ বছরের মেয়ে, হাতে কঁাকে ছেলে নিয়ে পাড়ায় বেড়িয়ে বেড়াচ্ছে, তা বোধহয় সকলেই দেখেছেন । তারা যেমন করে নিজেরা “মানুষ’ হয়েছে, বড় হয়ে নিজ নিজ সন্তানকেও তেমনি করে মানুষ করে। এই হল সাধারণ বাঙ্গালী গৃহস্থ ভদ্রঘরের কথা । ধনী দরিদ্রের ব্যবস্থা আলাদা। ধনীর ঘরে সেকাল একাল চিরকালই শিশুর চাকরিদাসীর কাছে মানুষ হয়। তাদের মধ্যেও পুত্ৰকন্যার আদর-আপ্যায়নের তারতম্য বেশ লক্ষিত হয়। আমাদের চক্ষের উপর সেকালে একালে—অর্থাৎ ৫০ বৎসর পূর্বে ও পরে, অনেক রকম পরিবর্তন হয়েছে,-কেবল হয়নি মেয়েদের অনাদরের। • পঞ্চাশ বৎসর পূর্বে আমাদের শৈশবে বিদ্যাসাগরের ‘বর্ণপরিচয়” চলিত ছিল, আমাদের অক্ষর-পরিচয় তাই থেকে হয়। কিন্তু মায়ের একখানা ‘শিশুবোধ’ আিছল-সেইখানা ছিল আমাদের প্রিয় এবং অবসর পাঠ্য । তাতে যে সেই কয়ে করাত, খয়ে খরগোস, গয়ে গাধা, ঘয়ে ঘুঘু,"ঙয়ে নোঙর-এর ছবিগুলি ছিল, তা দেখে দেখে আমাদের আর তৃপ্তি হ’ত না । সেই কালির অ্যাচড় ও ছোপগুলিতে আমাদের চৰ্ম্মচক্ষু না হোক মনশ্চক্ষু ঠিক জিনিসটা দেখতে পেত এবং চিত্তপটে চিত্রিত করে’ রাখতো। দাতাকৰ্ণ পড়তে পড়তে প্ৰাণ কেমন ক’রতো ; মা কোলে করে” বৃষকেতুকে কাটতে নিয়ে চলেছে-হোক সে ছবি হাস্যকর, কিন্তু তখন কই হাসি ত পেত না ? অতএব বীরবল যে বলেছেন “সেজোগুজে শিশু-সাহিত্য লেখবার আবশ্যকতা নেই”- এটা খাঁটি কথা। বড়দের নকল করাই হ’ল শিশুদের স্বভাব । যাদের কাছে কাছে তারা সর্বদা থাকে, তাদের নকল তারা করবেই। আমি