পাতা:সবুজ পত্র (দ্বিতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৯২

২য় বর্ষ, দশম সংখ্যা আৰ্য্যধৰ্ম্মের সহিত বাহ ধৰ্ম্মের যোগাযোগ VN) কৰ্ম্ম সম্বন্ধে উপদেশ দেওয়া নয়, আদেশ দেওয়া । তৎসত্ত্বেও বৌদ্ধ ও জৈনশাস্ত্রে যে সকল শীলের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে সে সকলের উপদেশ ধৰ্ম্মশাস্ত্রে ও আছে । এর থেকে শ্ৰীযুক্ত বিধুশেখর শাস্ত্রী মহাশয় প্রমাণ করতে চান যে, বৌদ্ধ এবং জৈনধৰ্ম্ম বৈদিক ধৰ্ম্ম হতে উৎপন্ন। বাহাধৰ্ম্ম এবং বৈদিক ধৰ্ম্মের এই শীলগত ঐক্য থেকে তার একটি যে অপর-আর-একটি থেকে উৎপন্ন এরূপ অনুমান করা যুক্তিসঙ্গত নয়। নচেৎ এ অনুমান ও সঙ্গত যে মানবধৰ্ম্মশাস্ত্র বাইবেল হতে উৎপন্ন ; কেননা চুরি করা, হিংসা করা, পরদর সেবন করা, মিথ্যা কথা বলা এবং পরদ্রব্যে লোভ করা মনুর মতেও অধৰ্ম্ম, Moses এর মতে ও অধৰ্ম্ম । এ প্রকার যুক্তি অনুসরণ করলে বরং এই সত্যে উপস্থিত হতে হয় যে বৈদিক ধৰ্ম্ম বৌদ্ধ এবং জৈনধৰ্ম্ম হতে উৎপন্ন, কেননা কোন কোন পুরাতত্ত্ববিদেব মতে ংস্কৃত ধৰ্ম্মশাস্ত্ৰসকল বুদ্ধের জন্মের পর বা স্ত্রী কালে লিখিত হয়েছিল । আমার বিশ্বাস যে, এ বিষয়ে ভারতবর্ষের কোনও ধৰ্ম্ম অপাের।-কোনও ধৰ্ম্মের নিকট ঋণী নয় । এই ধৰ্ম্মজ্ঞান ভারতবর্ষের উত্তরপথের প্রাচীন সভ্যতার অন্বয়াগত সম্পত্তি। এবং এই কারণেই ধৰ্ম্মশাস্ত্রে Moral Lawsাকে সামান্য-ধৰ্ম্ম বলে 한C করা হয়েছে। “চুরি করো না”-এ নিষেধ বৰ্ণাশ্রমনির্বিচারে সকলের পক্ষে সমান প্ৰযোজ্য । অপর পক্ষে বেদধ্যয়ন করে। এবং বেদাধ্যয়ন করে না-এ দুটি হচ্ছে ব্ৰাহ্মণ এবং শূদ্রের সম্বন্ধে বিশেষ বিধি এবং বিশেষ নিষেধ। অতএব বৈদিক বৌদ্ধ এবং জৈন প্রভৃতি ধৰ্ম্মের শীল যে একই আৰ্য্য মনোভাব হতে উৎপন্ন হয়েছে। এরূপ অনুমান অসঙ্গত নয়। yr