পাতা:সবুজ পত্র (দ্বিতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*tw সবুজ পত্র 5, »७२२ যতবার চেষ্টা করলুম। আমার চোখ ততবার ফিরে সেই-দিকেই গেল। শুনতে পাই, কোন কোন সাপের চোখে এমন আকর্ষণী শক্তি আছে, যার টানে গাছের পাখী মাটিতে নেমে আসে ; হাজার পাখা-ঝাপটা দিয়েও তা উড়ে যেতে পারে না । আমার মনের অবস্থাও ঐ পাখীর মতই হয়েছিল । বলাবাহুল্য, ইতিমধ্যে আমার মনে নেশা ধরেছিল,-ঐ পাচুলির গন্ধ আর ঐ চোখের আলো এই দুইয়ে মিশে আমার শরীর-মন দুই উত্তেজিত করে তুলেছিল। আমার মাথার ঠিক ছিল না। সুতরাং তখন যে কি কচ্ছিলুম তা আমি জানিনে। শুধু এইটুকু মনে আছে যে হঠাৎ তার গায়ে আমার গায়ের ধাক্কা লাগল। আমি মাপ চাইলুম ; সে হাসিমুখে উত্তর করলে—“আমার দোষ। তোমার নয়।” তার গলার স্বরে আমার বুকের ভিতর কি-যেন ঈষৎ কেঁপে উঠল, কেননা সে আওয়াজ বাঁশির নয়, তারের যন্ত্রের । তাতে জোয়ারি ছিল । এই কথার পর আমরা এমনভাবে পরস্পর কথাবাৰ্ত্তা আরম্ভ করলুম যেন আমরা দুজনে কতকালের বন্ধু। আমি তাকে এ-বইয়ের ছবি দেখাই, সে আর-একখানি বই উটনে নিয়ে জিজ্ঞেস করে আমি তা পড়েছি কিনা। এই করতে করতে কতক্ষণ কেটে গেল তা জানিনে। তার কথাবাৰ্ত্তায় বুঝলুম যে তার পড়াশুনো আমার-চাইতে ঢের বেশি । জৰ্ম্মাণ ফ্রেঞ্চ ইটালিয়ান তিন ভাষার সঙ্গেই দেখলুম। তার সমান পরিচয় আছে। আমি ফ্রেঞ্চ জানতুম তাই নিজের বিদ্যে-দেখাবার জন্যে একখানি ফরাসি কেতাব তুলে নিয়ে ঠিক তার মাঝখানে খুলে পড়তে লাগলুম ; সে আমার পিছনে দাড়িয়ে আমার কঁধের উপর দিয়ে