পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা নবীন সাহিত্যিক পারত, শতেক পাকে তা যদি বর্তমানের বস্তুতন্ত্রতার বজ্ৰ-আঁটুনীতেই বাঁধা পড়ে থাকত—তবে তার যে বিশেষ আদর হতাে সমাজে, এমন ত আমার বােধ হয় না। কারণ, ওরূপ বস্তুতন্ত্র সাহিত্যের ত্রিবিদ্যা ত জাতি বর্ণ নির্বিশেষে ঘরে ঘরে কাগজে কলমে না হোক কায়মনাে- বাক্যে আবালবৃদ্ধবণিতা আমরা সবাই সাধন করে আসছি। অভিজ্ঞতা সাহিত্য-সৃষ্টির পক্ষে প্রয়ােজন সন্দেহ নেই ;কিন্তু অনুভূতিই হয়েছে সাহিত্যের প্রাণ। বেদমন্ত্রে যতক্ষণ না মৃৎ-প্রতিমার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়, ততক্ষণ তা যেমন নিতান্ত জড়সমষ্টিমাত্র, তীক্ষ্ণ অনুভূতির প্রেরণায় অনুপ্রাণিত না হওয়া পর্যন্ত সাহিত্য-সৃজন- প্রয়াসও তেম্নি কথার কথা। অস্থি-সমাবেশপরিশূন্য জীবের অস্তিত্ব অসম্ভব নয় ; কিন্তু চেতনালেশ-পরিহীন প্রাণীর কল্পনাও অসঙ্গত। অধিকাংশ স্থলে সাহিত্যের সমালােচনার ছলে আমরা অভিজ্ঞ- তার মাপকাটীতে তার জড়-দেহটারই জরীপ করে থাকি ; তারি ফলে, নিভুল সমালােচনাও অনেক সময়ে নিরর্থক হয়ে পড়ে। অনুভূতি পদার্থ টী আমাদের নিত্য-নৈমিত্তিক অভিজ্ঞতার সাথে কোনো আপেক্ষিক অনুপাত রক্ষা করে চলে না। তা যদি চলত, তা হলে সামাজিক উপন্যাস কেবল সমাজপতি মহাশয়দের হাত থেকে বেরুত ; অবিনাশ বাবুও হয়ত “বার্ষিক উপন্যাস লিখুতেন না; আর, দ্বিজেন্দ্রলালের জীবন “রায় আর “রিপাের্ট” লিখেই কেটে যেত- অন্ততঃ রাণাপ্রতাপ, মেবার পতন, দুর্গাদাসের মত নাট্টসাহিত্য তার অধিকারের অন্তর্ভূক্ত হতো না। সাহিত্য বৈষয়িক-অভিজ্ঞতা-গত-প্রাণ নয় বলেই এ ক্ষেত্রে বয়সের বিচার নেই। “নবীন-সাহিত্যিক”, “প্রবীনসাহিত্যিক আদি করে’