পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা পত্র ১১১ নির্ভর করে এ সন্ধান তারা জানত। বর্তমান বৈজ্ঞানিক যুগের আর্ট অবশ্য গ্রীসের পথেও চলেনি, ভারতবর্ষের পথেও নয়। যুগের শিল্পীদের Motto হচ্ছে যদৃষ্টং তল্লিখিতং। অর্থাৎ তারা আর্টকে বস্তুতন্ত্র করতে গিয়ে নিজেরা হয়ে পড়েছেন অপদার্থ যন্ত্র। ইউক্লিডের জ্যামিতিকে যে, লােকে একনজরে আর্ট বলে চিতে পারে না, তার কারণ অপর সকল আর্টের উপাদান হচ্ছে ক্ষিতি, আর তঁার আর্টের উপাদান আকাশ। ইউক্লিডের হাতে যা ধরা পড়েছে সে সব হচ্ছে ত্রিদল চতুদল আকাশকুসুম। সুতরাং তাঁর রচনা শুধু আর্ট নয়, চরম আর্ট। তিনি যে, ত্রিকোণ চতুষ্কোণ বৃত্ত প্রভৃতি নির্মাণ করেছেন—তার উদ্দেশ্য হচ্ছে অসীমকে সসীম করা। ঐ সব ত্রিভুজ চতুভূজের ভিতর অসীম আকাশ এমন নিখুঁত ভাবে সসীম হয়ে রয়েছে যে তার একটি বিন্দু নড়চড় করলে তার রূপের সর্বনাশ হয়। জ্যামিতিকে আর্ট বলায় আমি ওবস্তুকে খেলো করছি নে। মানুষে কেন যে আর্টকে, দর্শন বিজ্ঞান প্রভৃতির নীচে আসন দিতে এত ব্যস্ত তার রহস্য আমি আজও উদ্ধার করতে পারিনি। এব্যাপার আমার কাছে একেবারেই দুর্বোধ্য, কেননা মানুষের ব্যবহারে দেখতে পাই যে, যে বিজ্ঞান দর্শনের ভিতর আর্ট আছে, সেই বিজ্ঞান দর্শনই মানুষকে মুগ্ধ করে। প্লোটার দর্শন যে আগাগােড়া আট তা দর্শনজ্ঞ ব্যক্তি মাত্রেই জানেন। তার আর্ট আবার ইউক্লিডের সহােদর। প্লোটার proto- types সব চিদাকাশের মন্দার পারিজাত বই আর কিছুই নয়। একটা স্বদেশী উদাহরণও নেওয়া যাক। শঙ্করের দর্শন যে দেশে বিদেশে এত মান্ত পেয়েছে তার একমাত্র কারণ, তার আর্ট। যে গুণে কালিদাসের কবিতা সংস্কৃত কাব্যসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ পদার্থ সেই একই গুণে শঙ্করের