পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সবুজ পত্র জ্যৈষ্ঠ, ১৩২৫ ভাই প্রমথ ! হঠাৎ আজ প্রাতঃকালে আমার দক্ষিণ কাধে বাতের মত হয়েছে—মাথা এবং হাত নাড়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে—এবং পৃষ্ঠদেশ যাকে সর্বদাই পশ্চাতে ফেলে রেখেছি—যাকে চক্ষেও দেখিনে-বহু পরিশ্রমের পর চৌকিতে ঠেসান দেবার সময় ব্যতীত, যার অস্তিত্ব কখন অনুভব করা যায় না সেই সর্বপশ্চাদ্বর্তী পৃষ্ঠদেশই আপনাকে চেতনা রাজ্যের একাধিপতি করে রেখেছে। তােমাকে এই যে ক’ লাইন চিঠি লিখলুম এর মধ্যে অনেক মুখভঙ্গী এবং আর্তনাদ অব্যক্ত ভাবে প্রচ্ছন্ন আছে। বর্তমান এই ব্যাধিটার তুলনায় মানসীর সমস্ত ঔদাস্য এবং নৈরাশ্য অত্যন্ত মিথ্যা এবং নিতান্ত সৌধীন বলে মনে হচ্চে। পিঠ এবং কঁধকে হৃদয় এবং আত্মার চেয়ে অনেক বেশী মনে হচ্ছে। অতএব আজ মানসীসম্বন্ধে ঠিক সমালােচনাটা আমার কাছ থেকে প্রত্যাশা করা যেতে পারে না। ভাল করে ভেবে দেখতে গেলে মানসীর ভালবাসার অংশটুকুই কাব্য-কথা-বড় রকমের সুন্দর রকমের খেলা মাত্র—ওর আসল সত্যি কথাটুকু হচ্ছে এই যে, মানুষ কি চায় তা কিছু জানে না—এক ঘটি জল চায়, কি আধখানা বেল চায়, জিজ্ঞাসা করলে বলতে পারে না, আমি এমন অবস্থায় মনের সঙ্গে আপষে বােঝাপড়া করে কল্পনার কল্পবৃক্ষের মায়াফল পাড়বার চেষ্টা করুচি। জানি, সত্য একে নিতান্ত অসন্তোষজনক, তার উপরে আবার রূঢ়ভাবে মানব-মনের মুখের উপর সর্বদা জবাব করে—তাই ধ্যানভরে কল্পনা-সিদ্ধ হবার চেষ্টা করা যাচ্চে-কল্পনার কাছ থেকেও পুরাে ফল পাওয়া যায় না কিন্তু সত্যের চেয়ে সে ঢের বেশী আজ্ঞা বহ। তাই জন্যেই সাধ যায় “সত্য যদি হত কল্পনা-আমি দুটো