পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, তৃতীয় সংখা নব-বিদ্যালয়

বজায় থাকে না। দিনে যদি ভাল করে জেগে থাকতে হয় তাহলে রাত্তিরে যে ভাল করে ঘুমনাে দরকার, এ বিষয়ে আমি নিজে সাক্ষী দিতে পারি। রাত জেগে পড়ার ফলে ছেলেরা যে দেহমনে ঝিমিয়ে পড়ে, এই প্রত্যক্ষ সত্যকে অগ্রাহ্য না করলে-বাঙ্গালী জাতটা আমার বিশ্বাস এর চাইতে ঢের বেশ সজাগ হতে পারত। তারপর নব-বিদ্যালয়ে ছেলেদের শোবার ঘরের দুয়াের-জানালা কখনও বন্ধ করা হয় না। এ বিষয়ে শীতগ্রীষ্মের কোনও তফাৎ নেই। আমাদের এই গরম দেশে আমরা শুধু দরজা-জানালা নয়- শার্শি পর্যন্ত এটে শুই ; ঠাণ্ডা লাগবার আমাদের এতই ভয়। কিন্তু রুদ্ধ-ঘরের বদ্ধ-বায়ুর ভিতর মানুষ হওয়ায় আমাদের ছেলেমেয়েদের বাল্যে সর্দিকাশি কামাইও যায় না, কমও হয় না তারপরে যৌবনে হয় তাদের ক্ষয়কাশ। বাংলাদেশের এই রাজধানীতে রাজঘক্ষমার প্রতাপ—বিশেষতঃ মেয়েমহলে-যে দিনের পর দিন কিরকম বেড়ে চলেছে, তার সন্ধান যে-কোনও ডাক্তাকবিরাজের কাছে পাবেন। অবরোধ-প্রথায় যে মানুষের শ্বাসরােধ করে, তার প্রমাণ আমাদের ঘরে ঘরে পাওয়া যায়। আলোহাওয়ার সৃষ্টি হয়েছে শুধু মানুষ মারবার জন্য,এরূপ বিশ্বাস করায় ভগবানের উপরেও সুবিচার কর হয় না, নিজের বুদ্ধিরও পরিচয় দেওয়া হয় না। দুয়োর বন্ধ করলেই যে মানুষে তার ভিতর বন্দী হয় এ জ্ঞান থাকলে, আমরা আমাদের বাসগারকে কারাগার করে তুলতুম না। বাহিরকে বাহির করে রাখলেই ঘর হয়ে পড়ে কবর। দিবারাত্র খােল হাওয়ার ভিতর বড় হলে, শরীর যে কত সুস্থ ও কত বলিষ্ঠ হয়, তার পরিচয় ঐ নব- বিদ্যালয়েই পাওয়া গেছে। অধ্যাপক ফারিয়া বলেন যে, তার স্কুলের