পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা নব-বিদ্যালয় নিদ্রার পরই ওঠে আহারের কথা। কথায় বলে—“আহারনিদ্রা” যত বাড়াও তত বাড়ে। এ কথার অর্থ—ও দুই কমানো সমান কর্তব্য। নব-বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের এর প্রথম অংশ গ্রাহ্য করেন, শেষ অংশ করেন না। তাদের মতে ছেলেরা যত ঘুমােয় ঘুমক, কিন্তু তাদের ভােজনের একটা সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া কর্তব্য। সভ্যসমাজের বেশীর ভাগ লােক যে মরে অতিভােজনের ফলে,উপবাসে নয়,-এ জ্ঞান যদি সাধারণ লােকের থাকত, তাহলে পৃথিবীর রােগ শোক অনেকটা কমে আস্ত। আমাদের দেশে এ জ্ঞানের বিশেষ দরকার আছে, কেননা আমরা আর যাই হই, জাত হিসেবে মিতাহারী নই। ভারতবর্ষের ইতিহাস আমাদের পেটের মধ্যেই পাওয়া যায়। আৰ্য্য মুসলমান ও ইংরাজের, আর কিছু না হোক, আর আমরা যুগপরম্প- রায় উদরস্থ করেছি। কঁচকলা সিদ্ধ আদি করে কোপ্তা কাবাব চপ কটলেট সবই আমাদের সমান ভক্ষ্য। পেটে খেলে পিঠে সয়, এ প্রবাদের জন্ম বাঙলাদেশে। অনেকে বলেন যে এতে বাঙালী জাতি তার assimi- lation-এর শক্তির পরিচয় দেয়; শুধু তাই নয়, যারা স্বদেশী ডাল রুটির সাহায্যে জীবন ধারণ করে, তাদের আমরা ছাতুখাের বলে অবজ্ঞা করি। আমাদের রসনা বিদেশী ভাষা যেরূপ অনায়াসে আত্মসাৎ করে, আমাদের উদর বিদেশী আহারও তদ্রুপ অনায়াসে আত্মসাৎ করে। নানা প্রকারের চর্ব্য চোষ্য লেহ পেয়ের রসাস্বাদন করায় সম্ভবত ক্ষতি নেই, কিন্তু তার পরিমাণ একটা সীমার ভিতর আবদ্ধ রাখা স্বাস্থ্যনীতির হিসেবে নিতান্ত প্রয়ােজন। Assimilation-এর শক্তি তার প্রবৃত্তির সঙ্গে খাপে খাপে মিলে যায় না। জীর্ণ করবার শক্তির