পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা নব-বিদ্যালয় ( ৭ ) নব-বিদ্যালয়ে স্নান প্রাতঃকৃত্য এবং সায়ংকৃত্য। সেখানে ছেলেদের দিনে দুবার নাইতে হয়, সকালে ঘরে ও বিকালে পুকুরে।. বায়ােমাস সকলের পক্ষে ঠাণ্ডা জলেরই ব্যবস্থা। গরম জল ওষুধের মত ডাক্তারের প্রিক্ৰিান ব্যতীত কাউকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। সাঁতার-কাটার সুফলে এদের বিশ্বাস এত অগাধ যে, সকল ছেলেকেই সাঁতার শিখতে হয়, এবং নিত্য অভ্যাস করতে হয়। এক সহুরে ছাড়া এদেশের আর সকল ছেলেদের অবগাহন-সুন একটা নিত্যনৈমিত্তিক কৰ্ম্ম, সুতরাং এ বিষয়ে এদের কাছে আমাদের কিছু শেখবার নেই-একটা জিনিস ছাড়া; নব-বিদ্যালয়ের ছেলেদের নেয়ে উঠে গা মুছতে দেওয়া হয় না। রােদে হওয়ায় তাদের গায়ের জল গায়েই শুকোয়। অর্থাৎ তাদের দেহ থেকে এক ভূতকে আর দুই ভূত দিয়ে তাড়ান হয়, এতে নাকি সে দেহের পঞ্চভূতে মিলিয়ে যাবার সম্ভাবনা অনেকটা কমে আসে। ছেলেরা যাতে করে পুরােদস্তুর sun-dried হয়, তার জন্য মানান্তে তাদের দিগম্বর অবস্থায় থাকতে হয়, কেননা এ বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষদের বিশ্বাস যে, শরীরের কোন অঙ্গকেই অষ্টপ্রহর অসূর্যম্পশ্য করে রাখা সঙ্গত নয়। এ কথাটার বিশেষ করে উল্লেখ করবার কারণ, সমাজ-দেহের অর্ধাঙ্গকে অসূৰ্য্যম্পশ্য করে রাখায় সে দেহ যে সুস্থ থাকে, এ বিশ্বাস কোন কোনও জাতের আছে। সেই সর্বনেশে ধারণাকে দূর করতে হলে, আললাহাওয়ার গুণকীৰ্ত্তন ফাক পেলেই করা উচিত। ডােরকৌপীন ধারণ করলে রক্তমাংসের শরীর যে ইস্পাত হয়ে ওঠে, তার কারণ সে শরীরকে রােদে পুড়িয়ে দলে ডােবানাে হয়।