পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০৮ সবুজ পত্র আষাঢ়, ১৩৫ ছেলেদের কর্মক্ষমতা সৰ্বাঙ্গসুন্দর করতে হলে, তাদের অল্প-বিস্তর কৃষিকৰ্ম্ম শেখানােও দরকার। লাঙ্গল চষলে, কোদাল পাড়লে শরীর যে বলিষ্ঠ হয়, সে কথা বলা বাহুল্য; সুতরাং এ অধ্যবসায়ে মন ও চরিত্রের কি উপকার হয়, সংক্ষেপে তারই উল্লেখ করছি। কারখানায় আমরা জড় পদার্থ নিয়ে কারবার করি, কিন্তু মাঠে আমাদের সজীব পদার্থের সঙ্গে কারবার করতে হয়। বীজ বােনা থেকে ধান পাকা পর্যন্ত আগাগােড়া একটা জীবনের অভিনয় চলে। জীব-তত্ত্বের প্রথম অধ্যায় মানুষে ঐ শস্যক্ষেত্রেই পাঠ কতে পারে। এই সূত্রে আমরা যে জীবনের ক্রমবিকাশের জ্ঞানলাভ করি, শুধু তাই নয়, সেই সঙ্গে সে জীবন যে আমরা রক্ষা করতে পারি, সংশােধিত করুতে পারি, পরিবর্ধিত করতে পারি, সে জ্ঞানও লাভ করি; এক কথায় এই সূত্রে আমরা আত্মজ্ঞানও লাভ করি। তার পর মাঠে কাজ করার দরুণ, ছেলেরা নানা গাছপালা ফুল ফল কীট পতঙ্গ জীবজন্তুর সাক্ষাৎ পরিচয় লাভ করে। শুধু তাদের আকৃতি নয়, তাদের প্রকৃতিরও পরিচয় পায়। এই উপায়ে তাদের জ্ঞানের ভাণ্ডার দিনের পর দিন পূর্ণ হয়ে ওঠে। সেই জ্ঞানের ভিত্তির উপরেই তাদের কেতাবি বিজ্ঞানের শিক্ষা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। গাছপালা জীবজন্তুর সঙ্গে যে ছেলের সাক্ষাৎ পরিচয় আছে—বটানি, জুওলজির কথা তার কাছে আর শুধু বইয়ের কথা নয়-জীবনের কথা। কৃষি-কর্মের আর একটি মহৎ ফল এই যে, ছেলেরা হাতেকলমে ও-কা করলে বড় বয়েসে কৃষি-জীবিদের প্রতি আর অবজ্ঞা করে । অলস ভদ্রসন্তানেরা নিম্ন-শ্রেণীর লােকদের যে অবজ্ঞার চোখে দেখে, তার প্রধান কারণ যে, কৃষিকার্ষের ভিতর যে কি মহত্ব ও মনুষ্যত্ব