পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা দু-দুবার বলেই হােক বা যে কারণেই হােক স্ত্রীজাতি সম্বন্ধে মনে মনে কোনদিন বিশেষ কোন ধারণা আনবার চেষ্টা করিনি, যা নাকি শতকরা নিরেনব্বই জন করে থাকে যৌবনে প্রথম পদার্পণ করবার সঙ্গে সঙ্গে। তাই একটি ১১ বৎসরের সুগােল, সুন্দর ঘােট মেয়ে তার পা-ভরা আল আর সি তে-ভরা সিদুর নিয়ে আমার একলা শােয়া খাটের একটি ধারে সমস্ত দেহটা কাপড়ে আর লজ্জায় ঢেকে নিয়ে যেদিন প্রথম শয়ন করতে এল, সেদিন সমস্ত দেহটা কণ্টকিত হয়ে উঠেছিল একটা অভূতপূর্ব অব্যক্ত পুলকভরে। আমার বিবাহের মধ্যে একটুখানি মূতনত্ব ছিল সেটা হচ্ছে এই যে, বাবা কন্যাপক্ষের কাছ থেকে এক কপর্দকও গ্রহণ করেন নি। লােকে এ সম্বন্ধে কিছু বল্লেই তিনি বলতেন “দরিদ্র ব্রাহ্মণের আশীৰ্বাদ টাকার চেয়ে অনেক বেশী মূল্যবান।” পাড়ার লােকে কিন্তু বাবার উপর অত্যন্ত চটে উঠেছিল—তাদের মতে এ কাজটা অত্যন্ত খারাপ হয়েছিল কেননা এতে করে পাত্রের বাজার নেবে যাবার সম্ভাবনা ছিল যথেষ্ট। সবের মধ্যে থেকেই মানুষ নিজের জন্যে খানিকটা সান্ত্বনা খুঁজে নেয়—তা না হলে সে বাঁচতে পারে না। যেখানে সত্যি সান্ত্বনা নেই সেখানেও তারা কোন না কোন উপায়ে একটা সান্ত্বনার খুঁটি খাড়া করে তােলে, তাকে ভর করে দাড়িয়ে থাকবার জন্যে, তা না হলে সে যে মুখ থুবড়ে পড়বে। আমিও তাই করলুম। এই এত বড় একটা সঙ্কল্পের বাঁধ যেদিন বাবারূপ ভাগ্য-দেবতার একটি তর্জনী হেলনে নদীর বালুচরের মত ধস ভেঙ্গে পড়ল, সেদিন নৈরাশ্যের সেই দুকুলহারা অনন্ত জলরাশির মধ্যে সান্ত্বনার একটা তক্তা যদি খুঁজে