পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৫৪ সৰু পৰ আষাঢ়, ১৩৫ পাই তারি জন্যে হাতড়ে বেড়াতে লাগলুম; পেতে বেশী দেরী হােলা না ; বিনাপণে বিবাহ, দরিদ্র ব্রাহ্মণের দায়ােদ্ধার—এই ত ভেসে যাবার মত তক্তা রয়েছে। আমি ডুবলুম না। দরিদ্রের দায়োদ্ধার, এটা কম সান্ত্বনা নয়। এই চিন্তাটাকে জপমালা করে চোক কান বুজে বিয়ে করে ফেলসুম। এতে ফল হােলাে এই যে, স্ত্রী সম্বন্ধে মনে মনে কোন ছবি আঁকতে গেলেই আমি সেই সব রং আর সেই সব রেখাগুলােই কেবল তার মুখে বিশেষ করে ফলিয়ে তুলতুম, যেগুলাে তার মনের কৃতজ্ঞতাকেই কেবল মুখে ফুটিয়ে তুলতে পারে—আর কোন ভাবকে নয়। সে যে চিরকাল আমার কাছে কেনা হয়ে থাকবে, আর তার বাপের প্রতি আমাদের দয়ার কথা ভেবে আমাকে দেবতার মত করে পূজা করবে খুব শ্রদ্ধা ও ভক্তির সঙ্গে, স্ত্রীর সম্বন্ধে কিছু ধারণা করতে গেলেই এই কথাটাই প্রথমে মনের মধ্যে বেজে উঠতাে। এমনি ধারণা নিয়ে নীরদাকে ঘরে এনে তুললুম, আর অতি সাবধানে এবং সতর্কতার সঙ্গে তার সঙ্গে মন ভাবে মিশতে লাগলুম, যাতে তার এই ধ্যান-মাধুরী কোন দিন না ভেঙ্গে যেতে পারে। আমার প্রত্যেক ব্যবহারের মধ্যে এমন একটা ভাব থাকতাে যা নাকি কেবল তার মনের মধ্যে কৃতজ্ঞতার যে অংশটা আছে তাকেই নাড়া দিতে পারে—আর কিছুকেই নয়। নীরা মেয়েটি যে কেমন ঠিক করে বলা শক্ত, তবে এক কথায় বলতে গেলে বলতে হয় তার মধ্যে নিজস্ব বলে কিছু ছিল না বা তাকে নিজস্ব কিছু সঞ্চয় করতে দেওয়া হয় নি, তার বাপের বাড়ীর তরফ থেকে। বাপের বাড়ীর পক্ষে এটা খুব মানের কাজ হয়েছিল সন্দেহ নেই। মেয়েদের যদি কোন একটা দিক থেকে