পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 সবুজ পত্র আষাঢ়, ১৩২ কোন রহস্যের যবনিকা ভেদ করে কোন্ স্বপ্নের সন্ধানে শিশু তার কালো চোখের নিৰ্ম্মল দৃষ্টি সীমাহীন দিগন্তে বন্ধ করে সিন্ধুকূলে বসে থাকে। কেউ জানে না। শিশু কি জানে? কে জানে শিশু জানে কি না। কিন্তু তবুও শিশু যায়। একা একা—সমস্ত ছেড়ে খেলাধুলা হাসি-গল্প সমস্ত পরিত্যাগ করে শিশু যায়, সেই ঝাউকুঞ্জ- তলে আপনাকে ভুলিয়ে দিতে—ভাসিয়ে দিতে—ডুবিয়ে দিতে। ক্রমে ক্রমে দক্ষিণা যখন জানল যে, প্রসাদ খেলবার নামে প্রকৃতপক্ষে সমুদ্রের ধারে গিয়ে একা একা বসে থাকে, তখন সে প্রসাদকে প্রথমে মিষ্টি কথায় তারপর ভৎসনায় ও অবশেষে ভয়প্রদর্শনে সেখানে যেতে নিরস্ত করতে চেষ্টা করুল কিন্তু যখন দেখল কিছুতেই কিছু হ’ল না তখন দক্ষিণা হতাশ হয়ে শ্ৰীমন্তকে একে একে সব কথা বলল। এর পর থেকে প্রসাদের বাহুমুল ও কণ্ঠদেশ ত্রিকোণ চতুষ্কোণ ঢলােকাকৃতি নানা বর্ণের নানা রকমের কবজে ও তাবিজে ভরে’ উঠতে লাগল। কত জনের কত মন্ত্র ঔষধী ইত্যাদির ছড়াছড়ি হতে লাগল। কিন্তু প্রসাদের মনের কোন পরিবর্তন দেখা গেল না। ফাক পেলেই সে ঐ ঝাউকুঞ্জতলে গিয়ে একলা সমুদ্রের দিকে পলক- হীন নেত্রে চেয়ে থাকে--বুঝি কান পেতে কি শুনতে থাকে। এই রকমে যখন কিছুতেই কিছু হল না—তখন শ্ৰীমন্ত ও দক্ষিণ পরামর্শ কতে বল। অনেক কথাবার্তার পর ঠিক হল যে, দক্ষিণা প্রসাদকে নিয়ে তার এক আত্মীয়ের বাড়ীতে গিয়ে কিছুদিন থাকবে। সে আত্মীয়ের বাড়ী সমুদ্রের উপকূল থেকে দশ ক্রোশ দূরে। আর @মস্ত মাঝে মাঝে সেখানে গিয়ে প্রসাদকে দেখে আসবে। তারপর