পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সবুজ পত্র এ বণ, ১৩২৫ মালা। কি ফুল তার উল্লেখ নেই, কিন্তু ধরে নেওয়া যেতে পারে যে, আর যাই হক গাদা নয় ; কেননা তারা বর্ণগন্ধের সৌকুমাৰ্য বুঝতেন। সিকৃথকরণ্ডক হচ্ছে—মােমের কোটা। সেকালে নাগরিকেরা, ঠোট আগে মােম দিয়ে পালিস করে নিয়ে, তারপর তাতে আলতা মাখতেন। সৌগন্ধিকপটিকা হচ্ছে- ইংরাজিতে যাকে বলে powder-box। বােতল না হয়ে বাক্স হবার কারণ, সেকালে অধিকাংশ গন্ধদ্রব্য চূর্ণ আকারেই ব্যবহৃত হত। দেয়াল ছেড়ে ঘরের মেজের দিকে দৃষ্টিপাত করলে–প্রথমেই চোখে পড়ে পতৎগ্রহ, অর্থাৎ পিকদানী। তারপর চোখ তুললে নজরে পড়ে, ভিত্তি- সংলগ্ন হস্তিদন্তে বিলম্বিত বীণা। টীকাকার বলেন সে বীণা আবার “নিচোল-অবগুণ্ঠিত”। বাংলার অনেক পদ্যলেখকদের ধারণা নিচোল অর্থে শাড়ী। “শাড়ীপরা বীণা”র অবশ্য কোনও মানে নেই। নিচোল অর্থে গেলাপ। জয়দেব যে শ্রীরাধিকাকে বলেছিলেন “শীলয় নীল নিচোলং” তার অর্থ “নীলরঙের একটি ঘেরাটোপ পর”। ইংরাজি ভাষায় ওর তর্জমা হচ্ছে—put on a dark blue cloak । এখন আবার প্রকৃত প্রস্তাবে ফিরে আসা যাক। তারপর পাই চিত্র- ফলক। সংস্কৃত কাব্যের বর্ণনা থেকে অনুমান করা যায়, পুরাকালে ছবি কাঠের উপরে আঁকা হত, কাপড়ের উপরে নয়। বর্তিকা সমুগকের অর্থ তুলি ও রঙ রাখবার বাক্স। তারপর বই। নাগরিকদের গৃহের এবং দেহের এই সাজসজ্জার বর্ণনা থেকেই বুঝতে পারবেন তারা কি চরিত্রের লোক ছিলেন। তারপর প্রশ্ন ওঠে, বই নিয়ে এ প্রকৃতির লোকেরা কি করতেন? কেননা নাগরিকেরা আর যাই হন, তারা যে সব উদাসীন গ্রন্থকীট ছিলেন না, সে বিষয়ে