পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, চতুর্থ সংখা বই পড়। আর কোনও সন্দেহ নেই। পুস্তক কি তবে এদের গৃহসজ্জার জন্য রক্ষিত হত, যেমন আজকাল কোন কোন ধনীলোকের গৃহে হয় ? সন্দেহ দৃঢ় হয়ে আসে, যখন টীকাকারের মুখে শুনতে পাই যে- “এই সকল বীণাদিদ্রব্য সর্বদা উপঘাতের অর্থাৎ ব্যবহার করিয়া নষ্ট করিবার জন্য নহে। কেবল বাসগৃহের শােভা সম্পাদনাৰ্থ ভিত্তি নিহিত হস্তিদন্তে ঝুলাইয়া রাখিতে হইবে। কালে ভদ্রে কখনাে প্রয়ােজন হইলে তাহা সেখান হইতে নামাইতে হবে।” পূর্বোক্ত সন্দেহের আরও কারণ আছে। সূত্রকার যখন বলেছেন—যঃ কশ্চিৎ পুস্তক, অর্থাৎ “যা হােক একটা বই”,—তখন ধরে নেওয়া যেতে পারে যে সে বই, আর যে কারণেই হােক, পড়বার জন্য রাখা হত না। কিন্তু টীকাকার আমাদের এ সন্দেহ অঞ্জন করেছেন। তার কথা এই ‘যঃ কশ্চিৎ' এটি সামান্য নির্দেশ হইলেও, তখনকার যে-কোনও কাব্য তাহাই পড়িবার জন্য রাখিবে, ইহাই যে সূত্রকারের উপদেশ, তাহা স্পষ্ট বুঝা যাইতেছে।” টীকাকারের এ সিদ্ধান্ত আমি গ্রাহ্য করি। বীণা ও পুস্তক দুই সরস্বতীয় দান হলেও,-ও দুই গ্রহণ করবার সমান শক্তি এক দেহে প্রায় থাকে না। বীণাবাদন বিশেষ সাধনাসাধ্য, পুস্তকপঠন অপেক্ষাকৃত ঢের সহজ। সুতরাং বই পড়ার অধিকার যত লােকের আছে, বীণা বাজাবার অধিকার তার সিকির সিকি লােকেরও নেই। এই কারণে সকলকে জোর করে বিদ্যাশিক্ষা দেবার ব্যবস্থা এ যুগের সকল সভ্য দেশেই আছে—কিন্তু কাউকে জোর করে সঙ্গীতশিক্ষা দেবার ব্যবস্থা কোনও অসভ্য দেশেও নেই। অতএব নাগরিকেরা বীণা দেয়ালে টাঙ্গিয়ে রাখতেন বলে যে পুথির ডুরি খুলতেন না, এরূপ