পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছােট গল্প। আমরা পাঁচজনে মিলে, এই যুদ্ধ নিয়ে বাক-যুদ্ধ করছিলুম। সুপ্রসন্ন হঠাৎ তর্কে ক্ষান্ত দিয়ে, একখানি বাঙলা বইয়ের পাতা ওল্টাতে লাগলেন। আমরা তার পড়ায় বাধা দিলুম না। আমরা জানতুম যে তার সঙ্গে কারও মতের মিল হচ্ছে না বলে, তিনি বিরক্ত হয়েছেন। এ অবস্থায় তাকে ফের আলােচনার ভিতর টেনে আনতে গেলে, তিনি মহা চটে যেতেন। আমি বরাবর লক্ষ্য করে আসছি যে, এই যুদ্ধ নিয়ে কথা কইতে গেলেই নিতান্ত নিরীহ ব্যক্তির অন্তরেও বীররসের সঞ্চার হয়, শেষটা তর্ক একটা মারামারি ব্যাপারে পরিণত হয়। সুতরাং আমি কথাটা উল্টে নেবার মনে মনে একটা সদুপায় খুজছি, এমন সময় সুপ্রসন্ন হঠাৎ আবার বইখানা টেবিলের উপর সজোরে নিক্ষেপ করে বলে উঠলেন—Nonsense. কথাটা এত চেঁচিয়ে বললেন, যে তাতে আমরা সকলেই একটু চমকে উঠলুম। আমি বল্লুম “কি nonsense হে”? সুপ্রসন্ন বললেন- -“তোমাদের এই বাংলা বইয়ে যা লেখা হয় তাই। সাধে ভদ্র- লােকে বাঙলা পড়ে না। এই বইখানা খুলেই দেখি লেখক বলছেন, ছােট গল্প প্রথমত ছােট হওয়া চাই, তারপর তা গল্প হওয়া চাই। কি চমৎকার defit on। এর পরেও লােকে বলে বাঙালীর শরীরে লজিক নেই।”