পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সবুজ পত্র বৈশাখ, ১৩২৫ গ্রন্থকারের একটু পরিচয় দিই। ইনি ছিলেন বেলজিয়ামের নব-ইউনিভারসিটির একজন অধ্যাপক। এর নাম Faria de Vas- concellos ; শিক্ষাই এর ধর্ম, শিক্ষাই এর কৰ্ম্ম, এবং স্বজাতির শিক্ষার উন্নতিকল্পেই ইনি জীবন উৎসর্গ করেছেন। প্রফেসর ফারিয়া ১৯১২ খৃষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে বেলজিয়ামে ব্রিজ নামক গ্রামে তার এই নব-বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করেন। জৰ্ম্মাণরা বেলজিয়াম অধিকার করবার পর এ স্কুল বন্ধ হয়, এবং প্রফেসর ফারিয়া জেনেভায় নির্বাসিত হন। তার অপরাধ, তিনি বিশ্বমানবের সাম্য-মৈত্রী ও স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন, এবং সেই বিশ্বাসের উপরেই তিনি তার নব-শিক্ষার পদ্ধতি গড়ে তােলেন। তাঁর মতে--এই যুগযুগান্তরের সভ্যতার ফলে মানুষ তার আদিম পশুত্ব হতে অনেকটা মুভি করেছে, এবং তার দৃঢ় ধারণা যে মানুষের সঙ্গে মানুষের মারামারি কাটাকাটির মুলে যা আছে তা মানবধৰ্ম্ম নয়—পশুপ্রবৃত্তি। মানুষের অন্তরে তার আদিম হিংস্রতা আজও লুপ্ত হয় নি-শুধু সুপ্ত হয়ে রয়েছে। যে শিক্ষার বলে মানুষের ভেদবুদ্ধি প্রবল হয়, সে শিক্ষার ফলে মানুষের আদিম পশুত্ব জেগে ওঠে, এবং nationalism প্রভৃতি কথার সাহায্যে ছেলেদের অন্তরে সেই সুপ্ত ব্যাকেই জাগ্রত করে তােলা হয়; সুতরাং শিক্ষার মন্দির থেকে ও সকল শব্দ বহিস্কৃত করে দেওয়াই কৰ্ত্তব্য। তার স্কুলের ছেলেদের মনে তিনি বিদেশী ও বিজাতির প্রতি মৈত্রীর ভাব উদ্বুদ্ধ করতে চেষ্টা করেছিলেন; তার ফলে তিনি ঝলেন—তারা মানুষ হয়েছে, অথচ কাপুরুষ হয় নি। প্রমাণ, শত্রুর আক্রমণ থেকে স্বজাতি ও স্বদেশকে রক্ষা করবার জন্য তার স্কুলের বড়ছেলেরা অকাতরে প্রাণ দিয়েছে। নিজে পশু না হলে যে, পশুর