পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V3VS সবুজ পত্ৰ veta, Yeae করে আজিতের অন্তর মাঝে দেখা দিলে। রেণু-আহা রেণু, আজি কোথায় ? ছোট বোনটির কথা মনে আসতেই বেদনার একটি প্রবল উচ্ছাস অজিতের প্রাণটার ভিতর ঢেউ তুলল। অজিতের মনে পড়ল, পুজোর পর ইস্কুলের ছুটি যখন শেষ হয়, বাড়ী থেকে তার যাত্রার দিনে, সে যখন নদীর ঘাটে নৌকোতে এসে উঠল, রেণু ঠাকুরমার আচলখানি ধরে ঘাটের পাড়ের উপর দাঁড়াল, আর নৌকোখানি যে পৰ্যন্ত না তাদের দৃষ্টি এড়িয়ে এল, রেণু সেইখানে ঠিক সেই ভাবে দাড়িয়ে দাদার নৌকোর দিকে একদৃষ্টি চেয়ে রইল। রেণুর কাছে সেই হ’ল অজিতের জন্মশোধ বিদায়। ঠাকুরমা ?-ঠাকুরমার ত স্নেহের অন্ত ছিল না। নিত্যি তিরিশ দিন সঁাঝের সময় মণ্ডপ-ঘরের দুয়োরে উপুড় হয়ে পড়ে অজিতের মঙ্গল কামনায় ঠাকুর দেবতার কাছে তিনি কত প্রার্থনাই না করেছেন। আহা ! ঠাকুরমা ও আজ আর নেই। অজিতের শ্ৰীতি ও অনুরাগের যে ধারাটি দিনে দিনে শুকিয়ে এসেছিল, আজ আবার তাতে প্ৰবল জোয়ার এল। আর সেই জোয়ারে ভেসে এল আর একজনের স্মৃতি । সে হ’ল গ্রামের জয়হরি সরকারের পুত্ৰ ভজহরি সরকার। গ্রামের যে পাঠশালাতে অজিত ভজহরির সঙ্গে একত্রে পড়ত, আজও সে পাঠশালা আছে। তবে র্যাদের যত্নে পাঠশালা গ্রামে স্থাপিত হয়েছিল, তঁদের অভাবে অনাদরের রূপ পাঠশালার ঘরে ফুটে বেরিয়েছে। ঘরের মেঝেতে এতই ধুলো জমেছে যে, একত্র করলে তার ওজন হয়ত এক মণের কম হবে না। ঘরের চৌকাঠ-কবাট কোথায় সব অদৃশ্য হয়েছে, আর তাদের শূন্য স্থান পুর্ণ করবার জন্য রয়েছে ক’খানি দারুমা ।