পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সবুজ পত্র বৈশাখ, ১৩২৫ তাহাকে প্রদীপ্ত করিয়া দেন। আমাদের মধ্যে যে অগ্নি নিস্তেজ হইয়া আছে তাহাকে উদ্দীপ্ত করিয়া দিবার জন্য, গুরুর প্রয়ােজন। চারিদিকের বস্তুপুঞ্জ আমাদের নীচের দিকে টানে। প্রাণ আপনার ভিতর আহুতি দিয়া ‘টি’ পুড়াইয়া শরীরকে উত্তপ্ত রাখিতেছে- নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে তাহার অনবরত চেষ্টা, বহির্জগতের যে একটি চাপ আছে, যাহার চেষ্টা তাহাকে বিধ্বস্ত করা, তাহার বিরুদ্ধে নিজেকে খাড়া রাখা। পৃথিবী আমাদের টানিতেছে শােয়াইয়া দিবার অন্য। আমরা যে খাড়া হইয়া আছি, চলিতেছি, সে প্রাণের জোরে। নিশ্চেষ্ট হওয়া কি না, সমস্ত জড়ের সহিত মিলিয়া যাওয়া। জড়জগৎ বৃহৎ, আমরা ক্ষুদ্র। সুতরাং জড়ের সঙ্গে প্রাণের এই দোঝাজুঝি একান্ত কষ্টকর। যে প্রচণ্ড শক্তি নিশ্চেষ্টর দিকে টানিতেছে তাহার কাছে আপনাকে ছাড়িয়া দিলে বিশ্রাম পাই। মাটিতে শয়ন করি, তাহাতে আমাদের আরাম হয়। প্রাণের ধর্ম ইহার উল্টা। প্রাণ আপনাকে স্বীয় শক্তির দ্বারা নিশ্চেষ্ট হইতে নিরন্তর রক্ষা করিতেছে। শিখার ধর্ম এ নহে যে একবার তাহাকে জ্বালাইয়া দেওয়া হইল,আর সব হইয়া গেল; নিত্য নিয়তই তাহাকে চেষ্টার দ্বারা নিজেকে রক্ষা করিতে হয়, তাহার সেই চেষ্টাই আলােক, তাহাই জ্যোতিরূপে আমাদের কাছে প্রকাশমান। কেবলি পুড়িতেছে, চলিতেছে, বাড়িতেছে, উঠিতেছে--বিপুল অড়- জগতের মধ্য হইতে নিজেকে উদ্ধার করিতেছে—এই প্রকাণ্ড উদ্যম, ইহাই প্রাণ। এই যুদ্ধে প্রাণ এক একবার পরাজবের দিকে যায়। আগুনও জ্বলিতে বলিতে বারবার পরাভবের দিকে যায়। যে ব্যক্তি তাহার উপকার