পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 p. , সবুজ পত্র । কাৰ্ত্তিক ও অগ্রহায়ণ, ১৩২৫ “তিলে তিলে নুতন হোয়”। তাই জীবন এত মধুর—এত রসাযুক্ত। “আজি আমাদের সাধের বৃন্দাবন নিত্য নূতন নূতন।” এই যে জীবন-বৃন্দাবন তা নিত্য নুতন নূতন। নিত্য নূতন মুকুট মাথায় দিয়ে জীবন-দেবতা নিত্য নব রসে অভিষিক্ত হয়ে নিত্য নূতন পথে চলছেন। তাইত দেখি মানুষ অনন্ত-বাইরের রক্ত মাংস তার মনের পাতায় দাড়ি টানে নি। বাহিরকে সে অন্তরের অনন্ত রহস্যে মণ্ডিত করে নিত্য নুতনের খেলা খেলছে। তাই এই বাহিরের জগৎ তার অন্তরের রঙে “তিলে তিলে নুতন হোয়” । নতুন যেখানে আপনার পথ পায় নি-যেখানে সে অবজ্ঞাত হয়েছে-মানুষের মনে প্ৰাণে যেখানে সে ভয় বা ভাচ্ছিল্য জাগিয়ে গিয়েছে—সেই খানেই পুরাতন ধীরে ধীরে মানুষকে জড়ে পরিণত করে” অমৃতের কাছ থেকে তাকে দুরে-অতিদূরে টেনে নিয়ে গেছে। মানুষের জীবনে অনন্ত সম্ভাবনার পথ সেখানে রুদ্ধ। সেখানে মানুষের আত্মার চাইতে মন-মনের চাইতে দেহের রক্ত মাংস বড় হ'য়ে উঠে ধীরে ধীরে তাকে মাটির দিকে টেনে নিয়ে গেছে-মাটিতে শিকড় গেড়ে তাকে উদ্ভিদে পরিণত করেছে-উদ্ভিদ ধীরে ধীরে পাথরে পরিণতি লাভ করেছে। নূতনের মধ্যে রয়েছে। গতি-ভাই সেখানে রয়েছে মানুষের কল্যাণ। তাই মানুষের জীবনের একটা বড় সত্যু হচ্ছে ঐ-যে তা “তিলে তিলে নূতন হোয়”।