পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

gle সৰু পত্র বৈশাখ, ১৩২৫ সমাজে যখন এই শ্রেণীর দুই একটি মানুষ দেখা দেয় তখনই বুঝিতে হইবে, গুরুর আগমনের পথ প্রস্তুত হইতেছে। দেশে যখন, এমন সকল লােক উঠিতে থাকেন যাহার বলেন “আমি বাঁধা মত মানিব না,কিন্তু আমার ভিতর যে বিচার বুদ্ধি আছে তাহাকে মানিব” তখন বুঝিতে হইবে গুরু অসিহস্তে আসিতেছেন—দশের চিত্তের চাঞ্চল্য, প্রাণের বেদনা, তাহারই আভাস দেয়। হঠাৎ একটা স্থলে দরজা খােলে, প্রাণবায়ুর স্পর্শে সকলের চিত্ত অল্পে গল্পে দোদুল্যমান হইতে থাকে। ক্রমে গুরু আসেন। গ্রীষ্মে সব শুকাইয়া গিয়াছে। নিজের ভিতর হইতে জোগাইবার রস আর নাই-সব তলানিতে গিয়া ঠেকিয়াছে। তখন সমস্ত বিশ্ব ব্যাকুল হইয়া বলিতে থাকে এস এস’! অমনি গুরু আসেন তাঁহার বজ লইয়া, বিদ্যুৎ লইয়া। সরসতায় তিনি আকাশ ভরিয়া দেন। যাহারা মরিয়াছিল তাহারা বাঁচিয়া ওঠে, পীতবর্ণ শ্যামল হইয়া ওঠে, জরা নবীন যৌবনে পরিণত হয়। এই ঘটনা মানুষের জীবনের মধ্যেও দেখিতে পাই। সমাজ যখন কল, ধৰ্ম্ম যখন আচার- মাত্র, তখন সকল বন্ধন ছিন্ন করিয়া আসেন গুরু। প্রাচীর নীচের চিত্ত আকাশ ভরিয়া যখন পূর্ণতার ঋতু আসেন, তখন তাহাকে ঠেকাইবে কে, তাহার ত কোনও সীমা নাই। লােহার দরজায় ঘা দিতে দিতে মনে হয়, বৃথা এই চেষ্টা। রুদ্ধ দরজাকে মুষ্টি আঘাত করিয়া হস্ত শুধু রক্তাক্ত হইতে থাকে। চেষ্টা অবশ্য জীবনের একটা লক্ষণ। কিন্তু এখানে ঠেলিয়া, ওখানে ভাঙ্গিয়া কিছু করা বড় শক্ত। আমাদের মধ্যে যাহারা বড়,তাহার গলা ভাজিয়া মরিলেন, কিন্তু দরজা একটু ফাক করা আর হইয়া উঠিতেছে না। আকাশ