পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় বর্ষ, সপ্তম ও অষ্টম সংখ্যা একখানি ছোট্ট উপন্যাস Aih সামান্য নারী হয়ে সে পদের কৰ্ত্তব্যাকৰ্ত্তব্য কোন সাহসে जूमि नि६ांद्रन করতে চাও? যে পৃথিবীর দিকচক্ররেখা, ঘরকন্নার সীমা অতিক্রম করেনি, সেই হল তোমার পৃথিবী ; তার বাইরে দৃষ্টি দেওয়া তোমার হাসির এই মৰ্ম্ম বিজলী ঠিক প্ৰণিধান করতে পারুক বা না পারুক, সে হাসির তুণে যে শার ছিল তার প্রাণের ভিতর গিয়ে তা । বিধূল। বিজলীর মনের অস্থিরতা মুহূৰ্ত্তে মুহূৰ্ত্তে বেড়েই চলছিল, —তার এমন অবস্থায় বৃদ্ধ স্ত্রীলোকটি এসে তার পায়ের উপর যেন, একেবারে টাল খেয়ে পড়লে। কুমারীশ তার নাতিটির উপর ছ’মাসের সজ্ঞশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছিল । যার অপরাধ বিজলী, দণ্ডযোগ্যই মনে করেনি, তার যে আবার এতদূর কঠিন সাজা হতে পারে, এমন ধারণা যে বিজলীর কল্পনাতেও স্থান পাবার অযোগ্য। বিজলীর মনে হল, তাকেই যেন শিক্ষা দেবার উদ্দেশ্যে কুমারীশ তার উপর এই দণ্ডাজ্ঞা প্রচার করেছে। বিজলীর সর্বাঙ্গের শিরা উপশিরায় বিদ্রোহের বহ্নি যেন জ্বলে উঠল। যদি সেই দণ্ডেই কুমারীশের হুকুম বাতিল করে তার আসামীকে মুক্তি দেবার কোন উপায় উদ্ভাবন হত, বিজলী তার জীবন পণ করে সেই কাৰ্য্যই সমাধা করত। বিজলীর দেহের প্রতি অণু-পরমাণু আজ কুমারীশের শাসন উল্টিয়ে দিয়ে তার বিপক্ষতা সাধন করতে যেন চায়। কুমারীশের ঘর-বাড়ীতে, অশোকবনের সীতাদেবীর মতো বিজলীর আজ তাই হল বন্দিনীরই অবস্থা। তার নিজের অবস্থাই যেখানে এতদূর নিঃসহায়, যে স্ত্রীলোকটি তার পায়ের তলায় পড়ে মাথা ভাঙ্গতে লাগল, তার সেখানে সে কোন হিত সাধন করবে ?