পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

er সবুজ পাৰ কাধিক ও অগ্রহায়ণ, ১৩২৫ একাধারে মানব ইতিহাস, মনোবিজ্ঞান, তৰ্কশাস্ত্র, ধ্বনিতত্ত্ব। এই বিদ্যা পশ্চিমের কাছ থেকে নোতুন যুগের এক দান হিসাবে আমাদের কাছে উপস্থিত; সমস্ত জীবন ধ’রে এর সাধনা করতে পারা যায় ; এর সাধনায় মানবমাত্ৰই অধিকারী, এর সাহায্যে অনেক বিষয়ের মোহ কাটিয়ে উঠতে পারা যায়, এই বিদ্যা ভাষার ভিতর দিয়ে” প্রাচীনের যথার্থ স্বরূপটি দেখিয়ে দেয়। ভাষা মানবের বিশেষ গৌরব ; আধুনিক জগতে জাতি ও সভ্যতা অর্থে ধৰ্ম্ম নয়, কৌলিক উৎপত্তি নয়, গণ-মণ্ডলী নয়, জাতি ও সভ্যতা অর্থে ভাষা । আমরা বাঙালীআমাদের মধ্যে হিন্দু আছে, মুসলমান আছে, আৰ্য আছে, দ্রাবিড় আছে, কোল মোঙ্গোল আছে, ফিরিঙ্গী আছে-কিন্তু আমাদের জাতীয়তার সূত্র হচ্ছে আমাদের বাঙলা-ভাষা। এই ভাষার জাত ঠিক হ’লে, এর পিতৃকুল মাতৃকুলের সমস্ত খবর জানা গেলে, বাঙালী জাতির বাঙালীর ধৰ্ম্মের সভ্যতার সমাজের সমস্ত লুকানো কথা বেরিয়ে” পড়বে। আমার ঘরের কথা, অথচ এত লুকানো, এত রহস্যময় হ’য়ে রয়েছে! ভাষাতত্ত্বের প্রদীপ এই রহস্যের অন্ধকার দূর করবার জন্য তৈরী রয়েছে। লোকে এই বিদ্যাকে বিশেষ নীরস বলে মনে করেসাধারণ লোককে সেজন্য দোষ দেওয়া যায় না।--কারণ এটি প্রথমত শুষ্ক বিশ্লেষণের কাজ-প্ৰতিপদে একে মাটি ছুয়ে” যেতে’ হয়। এতে কল্পনার হাওয়ায় উড়ে বেড়াবার পথ নেই-নানান সূত্র একসঙ্গে ধ’রে থাকতে হয়। এই বিদ্যায় মনের উপর যে ধকল পড়ে তা সকলে বরদাস্ত করতে পারে না। কিন্তু এর থেকে বার করবার জিনিস এত রয়েছেযথানিয়ম কাজ ক’রে গেলে এত নোতুন ব্যাপার আমাদের চোখে পড়ে যে, ধারা এর আস্বাদ পেয়েছেন, তারা পরিশ্রমকে পরিশ্রমই মনে