পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭৪ সবুজ পত্র জ্যৈষ্ঠ, ১৩২৫ আমরা উৎফুল্ল হইয়া ভাবি শিক্ষার বিস্তার হইতেছে ; কর্তৃপক্ষ শিহরিয়া বলেন এ সব ছেলে বাহির হইয়া করিবে কি, সরকারী ও সওদাগরী আফিসে কেরাণীগিরি আর ত খালি নাই। যা হােক এই রাজনৈতিক সমস্যার মীমাংসার উপায় শিক্ষানীতির মধ্যে নাই। এ জটিলতার নিবৃত্তি শিক্ষাতত্ত্ববিদের এলাকার বাহিরে। দেশ বিদেশের পণ্ডিত একসঙ্গে করিলেও এ প্রশ্নের উত্তর মিলিবে । কেননা এ সমস্যার মীমাংসা হইবে শিক্ষানীতি ক্ষেত্রের বাহিরে, রাজনীতির ক্ষেত্রে। সুতরাং আর পুথি না বাড়াইয়া সমস্যান্তরে দৃষ্টি দেওয়া যাক। (y) আমাদের শিক্ষার দ্বিতীয় সমস্যা হইল অসমস্যা। দেশের অনেকে প্রচলিত শিক্ষার উপর এইজন্য বিরক্ত যে, সে শিক্ষা শিক্ষিত বাঙ্গালীর অন্ন সংস্থানের যথেষ্ট ব্যবস্থা করিতে পারিতেছে না। আমাদের স্কুল কলেজের শিক্ষা পাইয়া ছেলেরা যেকয়টা চাকরী ও ব্যবসায়ের উপযুক্ত হইয়া বাহির হয় তাহার সংখ্যা অতি সামান্য, এবং ঐ শিক্ষায় শিক্ষিত বাঙ্গালীর অনুপাতে সে সংখ্যা দিন দিনই কমিয়া আসিতেছে। ফলে শিক্ষিত বাঙ্গালীর ঘরে অন্নাভাব প্রতিদিন বাড়িয়া চলিয়াছে, এবং বর্তমানেই তাহার মুর্তিটা যেমন ভীষণ হইয়া উঠিয়াছে, তাহাতে ভবিষ্যৎ ভাবিয়া শিহরিয়া উঠিতে হয়। দেশের শিক্ষা যদি শিক্ষিতের এই অম-সমস্যার একটা মীমাংসা করিতে না পারে তবে তাহা ব্যর্থ শিক্ষা, যাহার পরিবর্তন না হইলে দেশের মঙ্গল নাই।