পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা বিবাহের পণ সংখ্যা পুরুষদের সংখ্যা অপেক্ষা দশ বিশগুণ বেশী ছিল না, এবং আজকাল যে, পাত্রের এত অভাব তা census রিপাের্ট দেখলেই বােঝা যাবে যে এ মনে করা ভুল যে, পুরুষের সংখ্যা মেয়ের সংখ্যা অপেক্ষা কম। আজকাল যে বাল্যবিবাহ প্রচলিত নাই তার কারণ এ নয় যে বাঙ্গালীর নৈতিক জীবনের খুব উন্নতি হয়েছে, বরং তার কারণ এই যে অসমস্যা এমন উৎকট হয়ে উঠেছে যে ছেলেদের কতকটা উপার্জনের রাস্তায় এগিয়ে না দিয়ে বিবাহ দিতে বরের বাপও ইতস্ততঃ করেন এবং কন্যার পিতাও তেমন ছেলেকে সুপাত্র মনে করেন না। বাল্যবিবাহ ও জাতিকুলের কালে যতগুলি সুপাত্র ছিল ততগুলিই সুপাত্রী ছিল, সুতরাং বিবাহে কোনও গোল ছিল না। আজ কাল পাত্রের সংখ্যার অল্পতা না থাকলেও সুপাত্রের অত্যন্ত অভাব। আমাদের দেশের মেয়ের কোনও দাম বাড়ে নি, এমন কি বড়লোকের অশিক্ষিত মেয়েও গরীবের শিক্ষিত মেয়ের অপেক্ষা বাঞ্ছনীয়া-অথচ পক্ষান্তরে কতকগুলি ছেলের, তাদের উপার্জন ক্ষমতা অনুসারে বা উপাধির অম্লাধিক্য হিসাবে মুল্য বেড়েছে। সকল কন্যার পিতার ইচ্ছা যে এমন পাত্রে মেয়েকে দেন যে তা অন্ততঃ অন্ন- বস্ত্রের ক্লেশ না থাকে, কিন্তু দিনকাল দেখে এবং চাকরী-ডাক্তারী ওকালতীগতপ্রাণ বাঙ্গালীদের অবস্থা দেখে তারা কেবল বিশ্ব- বিদ্যালয়ের ছাপধারী ছেলেগুলিকেই সুপাত্র মনে করেন। সব মেয়েরই বিবাহ দিতে হবে অথচ তাদের মধ্যে সমাজ এমন কোনও জিনিস দেখতে শেখেনি যাতে করে একটা মেয়ে আর একটা মেয়ে অপেক্ষা বধু হিসাবে অধিক বাঞ্ছনীয়া হয়। বেশী লেখাপড়া শেখা অনেক স্থলে দোষের মধ্যেই গণ্য হয়! রূপের অবশ্য একটু