পাতা:সমাজ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমাজ وه.8 ত বেশ সুখে আছি এবং তারা যে বড় অসুখী আছেন এমনতর আমাদের কাছে ত কখনো প্রকাশ করেন নি, মাঝেব থেকে সহস্র ক্রোশ দূরে লোকের অনৰ্থক হৃদয় বিদীর্ণ হয়ে যায় কেন ? পরম্পরের সুখদুঃখ সম্বন্ধে লোকে স্বভাবতই অত্যন্ত ভুল করে থাকেন । মৎস্য যদি উত্তরোত্তব সভ্যতার বিকাশে সহসা মানব-হিতৈষী হয়ে উঠে, তা হ’লে সমস্ত মানব-জাতিকে একটা শৈবালবহুল গভীর সরোবরের মধ্যে নিমগ্ন না করে কিছুতে কি তার করুণ হৃদযের উৎকণ্ঠ দূর হয় ? তোমরা বাহিবে মুণী আমরা গৃহে মুগা, এখন আমাদের মুখ তোমাদের বোঝাই কি করে’ ? একজন লেডি-ডফারিন-স্ত্রীডাক্তার আমাদের অন্তঃপুরে প্রবেশ কবে যখন দেখে, অপরিচ্ছন্ন ছোট কুঠরি ; ছোট ছোট জালনা ; বিছানাটা নিতান্ত দুগ্ধফেননিভ নয়, মাটির প্রদীপ, দড়িবাধা মশারি, আটষ্টডিয়ার রং-লেপ ছবি, দেয়ালের গাত্রে দীপশিখার কলঙ্ক এবং বহুজনের বহুদিনের মলিন করতলের চিহ্ন—তখন সে মনে করে কি সৰ্ব্বনাশ, কি ভয়ানক কষ্টের জীবন, এদের পুরুষেরা কি স্বার্থপর, স্ত্রীলোকদের জন্তুর মত করে রেখেচে । জানে না আমাদের দশাই এই । আমরা মিল পড়ি, স্পেন্সর পড়ি, রস্কিন পড়ি, আপিসে কাজ করি, খবরের কাগজে লিখি, বই ছাপাই, ঐ মাটির প্রদীপ জালি, ঐ মাদুরে বসি, অবস্থা কিঞ্চিৎ সচ্ছল হ’লে অভিমানিনী সহধৰ্ম্মিণীর গহনা গড়িয়ে দিই, এবং ঐ দড়িবাধা মোটা মশারির মধ্যে আমি, আমার স্ত্রী এবং মাঝখানে একটি কচি থোকা নিয়ে তালপাতার হাতপাখা গেয়ে রাত্রিযাপন করি । কিন্তু আশ্চৰ্য্য এই, তবু আমরা নিতান্ত অধম নই। আমাদের কোঁচ কাপেটু কেদার নেই বল্লেই হয়, কিন্তু তবুও ত আমাদের দয়ামায়া ভালবাসা আছে ৷ তক্তপোষের উপর অৰ্দ্ধশয়ান-অবস্থায় এক