একটা জাতিভেদের মত দাঁড়াচ্চে, অতএব অধিকাংশ স্থলেই আমাদের বরকন্যার মধ্যে যথার্থ অসবর্ণ বিবাহ হচ্চে। একজনের চিন্তা, চিন্তার ভাষা, বিশ্বাস এবং কাজ আর এক জনের সঙ্গে বিস্তর বিভিন্ন। এই জন্যে আমাদের আধুনিক দাম্পত্যে অনেক প্রহসন এবং সম্ভবত অনেক ট্র্যাজেডিও ঘটে’ থাকে। স্বামী যেখানে ঝাঁঝালো সোডাওয়াটার চায়, স্ত্রী সেখানে সুশীতল ডাবের জল এনে উপস্থিত করে।
এই জন্যে সমাজে স্ত্রীশিক্ষা ক্রমশই প্রচলিত হচ্চে, কারো বক্তৃতায় নয়, কর্ত্তব্যজ্ঞানে নয়, আবশ্যকের বশে।
এখন, অন্তরে বাহিরে এই ইংরাজি শিক্ষা প্রবেশ করে’ সমাজের অনেক ভাবান্তর উপস্থিত করবেই সন্দেহ নেই। কিন্তু যারা আশঙ্কা করেন আমরা এই শিক্ষার প্রভাবে য়ুরোপীয় সভ্যতার মধ্যে প্রাচ্যলীলা সম্বরণ করে’ পরম পাশ্চাত্যলোক লাভ করব— আমার আশা এবং আমার বিশ্বাস তাঁদের সে আশঙ্কা ব্যর্থ হবে।
কারণ, যেমন শিক্ষাই পাই না কেন, আমাদের একেবারে রূপান্তর হওয়া অসম্ভব। ইংরাজি শিক্ষা আমাদের কেবল কতকগুলি ভাব এনে দিতে পারে কিন্তু তার সমস্ত অনুকূল অবস্থা এনে দিতে পারে না। ইংরাজি সাহিত্য পেতে পারি কিন্তু ইংলণ্ড পাব কোথা থেকে। বীজ পাওয়া যায় কিন্তু মাটি পাওয়াই কঠিন।
দৃষ্টান্তস্বরূপে দেখান যেতে পারে, বাইব্ল্ যদিও বহুকাল হ’তে য়ুরোপের প্রধান শিক্ষার গ্রন্থ, তথাপি য়ুরোপ আপন অসহিষ্ণু দুর্দ্দান্ত ভাব রক্ষা করে’ এসেছে, বাইবেলের ক্ষমা এবং নম্রতা এখনো তাদের অন্তরকে গলাতে পারেনি।
আমার ত বোধ হয় যুরোপের পরম সৌভাগ্যের বিষয় এই যে য়ুরোপ বাল্যকাল হ’তে এমন একটি শিক্ষা পাচ্চে যা তার প্রকৃতির সম্পূর্ণ অনুযায়ী নয়, যা তার সহজ স্বভাবের কাছে নূতন অধিকার