বুঝি কেহ পাড়া প্রতিবেশীর খোঁজ রাখে না! বিপদ আপদে লোকের সাহায্য করে না; হাতে টাকা থাকিলে সামান্য জাঁকজমক লইয়াই থাকে, দশজন অনাথকে প্রতিপালন করে না; তাই বুঝি পিতা মাতা অযত্নে অনাদরে কষ্টে থাকেন অথচ নিজের ঘরে সুখ স্বচ্ছন্দতার অভাব নাই—নিজের সামান্য অভাবটুকু হইলেই রক্ষা নাই—কিন্তু পরিবারস্থ আর সকলের ঘরে গুরুতর অনটন হইলেও বলেন হাতে টাকা নাই। এই ত ভাই এখনকার সহৃদয়তা! মনের দুঃখে অনেক কথা বলিলাম। আমি কালেজে পড়ি নাই সুতরাং আমার এত কথা বলিবার কোনো অধিকার নাই। কিন্তু তোমরা কিছু আমাদের নিন্দা করিতে ছাড় না, আমরাও যখন তোমাদের সম্বন্ধে দুই একটা কথা বলি সে কথাগুলোয় একটু কর্ণপাত করিয়ো।
চিঠি লিখিতে আরম্ভ করিয়াই তোমাকে কি “পাঠ” লিখিব এই ভাবনা প্রথম মনে উদয় হয়। একবার ভাবিলাম লিখি “মাই ডিয়ার নাতি,” কিন্তু সেটা আমার সহ্য হইল না; তার পরে ভাবিলাম বাঙ্গালা করিয়া লিখি “আমার প্রিয় নাতি,” সেটাও বুড় মানুষের এই খাক্ড়ার কলম দিয়া বাহির হইল না। খপ্ করিয়া লিখিয়া ফেলিলাম “পরম শুভাশীর্ব্বাদ রাশয়ঃ সন্তু।” লিখিয়া হাঁপ ছাড়িয়া বাঁচিলাম। ভাবিলাম ছেলেপিলেরা ত আমাদিগকে প্রণাম করা বন্ধ করিয়াছে তাই বলিয়া কি আমরা তাহাদিগকে আশীর্ব্বাদ করিতে ভুলিব! তোমাদের ভাল হউক ভাই, আমরা এই চাই; আমাদের যা হইবার হইয়া গিয়াছে। তোমরা আমাদের প্রণাম কর আর না কর আমাদের তাহাতে কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি নাই, কিন্তু তোমাদের আছে। ভক্তি করিতে যাহাদের লজ্জাবোধ হয় তাহাদের কোনো কালে মঙ্গল হয় না। বড়র কাছে নীচু হইয়া আমরা বড় হইতে শিখি, মাথাটা তুলিয়া থাকিলেই যে বড় হই তাহা নয়। পৃথিবীতে আমার চেয়ে উঁচু আর কিছু নাই, আমি বাবার জ্যেষ্ঠতাত,