পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
তার্কিক
১৭

হইয়া আলোর কথা বলি, অন্ধকার হইয়া অন্ধকারের কথা বলি। আমার দুটা কথাই সত্য। আমি কিছু এমন প্রতিজ্ঞ করিয়া বসি নাই যে একেবারে বিরোধী কথা বলিব না, যে ব্যক্তি কোন কালে বিরোধী কথা বলে নাই তাহার বুদ্ধি ত জড়পদার্থ; তাহার কোন কথাব কোন মূল্য আছে কি? আমরা যে বিরোধের মধ্যেই বাস কবি। আমাদের অদ্য আমাদেব কল্যকার বিরোধী, আমাদের বৃদ্ধকাল আমাদের বাল্যকালের বিবোধী; সকালে যাহা সত্য বিকালে তাহা সত্য নহে। এত বিরোধের মধ্যে থাকিয়াও যাহার কথার পরিবর্ত্তন হয় না, যাহার মত অবিরোধে থাকে, তাহার বৃদ্ধিটাত একটা কলের পুতুল, যত বার দম দিবে ততবার একই নাচন নাচিবে!

 উপসংহাবে আর গুটিদুই কথা বলিয়া শেষ করি।

 যে পাড়ার ক্রোশ তিনেকের মধ্যে তার্কিক লোকের গন্ধ আছে, সেখানে বোধ করি, কোন ভাল লোক তিষ্ঠিতে পাবেন না। বোধ করি তার্কিক লোকের মুখ দেখিলেই ভাবের বিকাশ বন্ধ হইয়া যায়। অতএব যাঁহারা ভাবের চর্চ্চা করিতে চান, তাঁহারা কাছাকাছি এমন বন্ধু রাখিবেন যাঁহাদের সহিত মতের মিল আছে। অনুরাগের আবহাওয়ার মধ্যে থাকিলে মনের গূঢ় ক্ষমতাগুলি যেমন সতেজে মাটি ফুঁড়িয়া উঠে, এমন আর কোথাও নয়।

 একটা গাছে কতশত বীজ জন্মে। তাহার মধ্যে সবগুলা কিছু গাছ হয় না। কিন্তু গুটিকত গাছ জন্মাইবার উদ্দেশে বিস্তর নিষ্ফল বীজ জন্মানো আবশ্যক। আমাদেরও সকল ভাব কিছু সফল হইবে