পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২৪
সমালোচনা

হইতেই ছোবল মারে! এই সকল কীটগণ মনে করে ফুলেরা যে সুন্দর হইয়া ফুটিয়া উঠে, সে কেবল ইহাদের দংশন সুখ অনুভব করিবার জন্যই! এই সকল পেচকেরা মনে করে যে, সূর্য্য যে কিরণ দান করেন সে কেবল পেঁচার সহিত তাঁহার শত্রুতা আছে বলিয়াই।

 আর এক দল লোক আছেন,তাঁহারা চিরকাল মৎলব খাটাইয়া আসিতেছেন, তাঁহারা সহজে বিশ্বাস করিতে পারেন না পৃথিবীতে কাহারো উদারতা আছে। সিধা কথা, সামান্য কাজের মধ্য হইতে একটা ঘোরতর গূঢ় মৎলব বাহির করিতে ইঁহাদের বুদ্ধি অত্যন্ত আমোদ পায়। একটা দুরন্ত অস্থির ছুঁচাল বক্রবুদ্ধি ইঁহাদের মনের মধ্যে দিন-রাত ছটফট করিতেছে, তাহাকে ত একটা কাজ দিতে হইবে–সিধা কাজে সে খেলাইতে পায় না– এই নিমিত্ত সিধার মধ্যেও সে একটা বাঁকা রাস্তা গড়িয়া লয়। খেলাইবার জায়গা ভাল! এক জন লোকের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য, একমাত্র আশা, যাহার কাছে সে তাহার দুর্দ্দান্ত স্বার্থপরতাকে বলিদান দিয়াছে, মান অপমানকে তৃণ জ্ঞান করিয়াছে তাহাই লইয়া খেলা! এক জন লোক যখন পরের দুঃখ দেখিয়া, দারিদ্র্য দেখিয়া কাঁদিয়া উঠিয়াছে, তখন তাহার সেই অশ্রুবিন্দু লইয়া সমালোচনা। এক জন সহৃদয় লোক যখন উচ্ছ্বসিত আবেগে প্রাণের কথা বলিতেছে, তখন তাহার সেই কথাগুলিকে বাঁকা ছাঁচে চালিয়া তাহাদের আকৃতি সম্পূর্ণ বদল করিয়া দেওয়া! এ সকল কেমনতর হৃদয়হীন খেলা। ইহাতে যে তোমার নিজের হৃদয়ের সর্ব্বনাশ করা হয়। ফুল মৎলব করিয়া সুন্দর হইয়াছে, পাখী মৎলব করিয়া